344335

দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ চরিত্রবান স্ত্রী

মানুষের জন্য দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ সতীসাধ্বী রমণী। বাণীটি অতি ক্ষুদ্র হলেও এর তাৎপর্য ব্যাপক। একজন নারীর সংশ্রব ব্যতীত পুরুষের জীবনের পরিপূর্ণতা আসে না। সুখে-দুঃখে নারীই মানুষের জীবনসঙ্গিনী। সুতরাং দাম্পত্য জীবনে এ নারী যদি পূত-পবিত্র সচ্চরিত্রবান হয়, তাহলে জীবন স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। সমস্যাসঙ্কুল জীবনেও শান্তির ফল্গুধারা বয়ে যায়। যে শান্তি নারী-পুরুষের বৈবাহিক জীবনের মাধ্যমে শুরু হয়। বিবাহিত জীবনে নেককার স্ত্রীর গুরুত্ব অত্যধিক। তাই ইসলাম স্ত্রীকে দিয়েছে সর্বোত্তম মর্যাদা।

ইসলাম পূর্বযুগে বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়াই মহিলাদেরকে পুরুষের মালিকানাধীন মনে করা হতো এবং একজন পুরুষ যত খুশি বিয়ে করতে পারতো। ইসলাম নারীদের জন্য বিয়েকে বৈধ এবং আবশ্যক করেছেন। বিয়ের মাধ্যমে নারীকে সম্মানজনক আসনে সমাসীন করা হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যেকার পুরুষ আর মহিলাদের মধ্য থেকে তাদের বিয়ে দিয়ে দাও যারা দাম্পত্য ছাড়া জীবন অতিবাহিত করে।’ -সূরা নূর

ইসলাম পূর্ব যুগে নারীরা তাদের বিয়ের দেনমোহরের মালিকানা পেত না। ইসলাম নারীর মর্যাদা রক্ষায় মোহরের বিধান প্রবর্তন করে তা স্বামীর ওপর ফরজ সাব্যস্ত করেছে। তাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, যদি মোহররূপে অঢেল সম্পদও দেওয়া হয় তা ফেরত নেওয়া যাবে না। কেননা মোহর বিয়ের শর্ত হওয়ায় সেগুলো স্ত্রীর মালিকানাধীন হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশিমনে। তারা যদি খুশি হয়ে তা থেকে (কিছু) অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। -সূরা নিসা: ৪

মোহর নির্ধারণের মাধ্যমে নারী-পুরুষ পরস্পর ইজাব-কবুল করে একজন পুরুষ একজন নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে। স্ত্রী হিসেবে নারীকে এক স্বকীয় মর্যাদায় অধিষ্টিত করেছে ইসলাম। তাই স্বামীকে স্ত্রীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা সদাচরণের ভিত্তিতে তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে জীবন-যাপন কর।’ -সূরা নিসা

সংসার জীবন সুখের লক্ষ্যে আল্লাহতায়ালা অন্যত্র বলেন, ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের আবরণস্বরূপ এবং তোমরাও তাদের জন্য আবরণস্বরূপ।’ -সূরা বাকারা

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অধিকার সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মহিলাদের পুরুষদের ওপর যেমন অধিকার আছে তেমনি পুরুষদেরও মহিলাদের ওপর অধিকার রয়েছে।’ -সূরা বাকারা

বিয়ের মাধ্যমে একজন নারী স্ত্রীর মর্যাদা লাভ করার পর পুরুষকে নারীর যাবতীয় প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এর মধ্যে তার খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ প্রয়োজনীয় বিষয়াদী অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘পুরুষ মহিলাদের রক্ষক এবং ব্যবস্থাপক এ জন্য যে, আল্লাহতায়ালা তাদের মধ্য থেকে একজনকে অন্যজনের ওপর মর্যাদা দিয়েছেন। আর এ জন্যও যে, পুরুষ তাদের জন্য নিজের সম্পদ ব্যয় করে।’ -সূরা নিসা

বস্তুত ইসলাম নারীকে জীবনের সব দিকে থেকে এক অনুপম মর্যাদা ও অধিকারে অভিষিক্ত করেছে। কোরআনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে ইসলাম পুরুষের জীবন পরিচালনার ন্যায় নারীদেরকেও সম্মান ও মর্যাদা এবং মৌলিক অধিকার প্রদান করে এমন এক সভ্যতার গোড়াপত্তন করেছে। যা নারীর ভূলুণ্ঠিত মর্যাদা ও অধিকার ফিরে পেতে হলে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই।

আল্লাহতায়ালা মুসলিম উম্মাহকে স্ত্রীর প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনসহ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামি অনুশাসন মেনে চলার তওফিক দান করুন। আমিন।

ad

পাঠকের মতামত