343869

‘ভূমিধস’ বিজয় পেয়ে প্রথমবারের মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গঠন করছেন জেসিন্ডা আর্ডার্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিউজিল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের চেয়ে ‘ভূমিধস’ বিজয় পেয়ে প্রথমবারের মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গঠন করছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন। জনমত জরিপে স্পষ্টতই তিনি এগিয়ে ছিলেন। শংকা ছিল, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের লেবার পার্টি। কিন্তু ভোট শেষে দেখা গেল, শুধু একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নয়; বিশাল বিজয় পেয়েছে লেবার পার্টি। খবর বিবিসি।

গতকাল শনিবার বিকেলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য-বামপন্থি জেসিন্ডা আরডার্নের লেবার পার্টি মোট ভোটের ৪৯ ভাগ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ ন্যাশনাল পার্টি পেয়েছে ২৭ ভাগ ভোট। দেশটির ১২০ আসনের মধ্যে এরই মধ্যে ৬৪টি আসনে জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। আরো ভোট গণনা বাকি রয়েছে।

ভোটে বিজয়ের পর জেসিন্ডা আরডার্ন সমর্থক ও নিউজিল্যান্ডবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডবাসী গত ৫০ বছরের মধ্যে লেবার পার্টির প্রতি সবচেয়ে বেশি সমর্থন ও আস্থা রেখেছে। আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন সেটা আমরা গণ্য করব না। বরং আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরা প্রতিটি নিউজিল্যান্ডবাসীর সরকার হব।’

গত সেপ্টেম্বরে এ ভোট হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারীর কারণে তা এক মাস পিছিয়ে দেয়া হয়। নির্বাচনের আগেই বেশির ভাগ জনমত জরিপ ইঙ্গিত দিয়েছিল, দক্ষতার সঙ্গে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্নই দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন।

এদিকে, বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় কোনো দলের পক্ষেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন সম্ভব নয় বলে ধারণা করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে দেশটিতে মিশ্র সদস্য আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (এমএমপি) ব্যবস্থা চালুর পর এখন পর্যন্ত কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে এ ধারণা ভুল প্রমাণ করেছে জেসিন্ডা আর্ডার্নের দল লেবার পার্টি। এমএমপি ব্যবস্থা চালুর পর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আসন পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে দলটি। ফলে এবারই প্রথমবারের মতো একক দলের সরকার গঠন করতে পারবেন জেসিন্ডা আর্ডার্ন। আর্ডার্নের লেবার পার্টি পার্লামেন্টে ৬৪টি আসন পেতে পারে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, যা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যথেষ্ট।

নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাফল্য, ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার পর হতাহতদের পাশে থাকাসহ বিভিন্ন ঘটনায় নাগরিকদের মানসিকতা বুঝে ব্যবস্থা নেয়ার ফলে ভোটারদের সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন জেসিন্ডা আর্ডার্ন।

নির্বাচনের আগে লেবার পার্টি সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরো অর্থ প্রদান, জলবায়ুবান্ধব নীতি বাস্তবায়নের প্রতি জোর দিয়েছে। অন্যদিকে অবকাঠামোগত বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ঋণ মওকুফ ও সাময়িক সময়ের জন্য কর হ্রাসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ন্যাশনাল পার্টি।

লেবার পার্টির এ বিশাল জয়ের খবরে জেসিন্ডা আর্ডার্নকে স্বাগত জানিয়েছেন ন্যাশনাল পার্টির নেতা জুডিথ কলিন্স। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আবারো লেবার পার্টির শক্ত বিরোধী হিসেবে লড়বে তার দল। তিনি বলেন, চোখের পলকেই তিন বছর কেটে যাবে। পরবর্তী নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা আবারো ফিরে আসব। সূত্র : বিবিসি

ad

পাঠকের মতামত