342756

শা’রীরিক সম্পর্কের পর টাকা না দেওয়ায় ধ’র্ষণ মা’মলা!

নবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে গণ’ধ’র্ষণ করা হয় বলে অ’ভিযোগ তোলেন এক নারী। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার যুবক, নারী ও তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, গণধ’র্ষণের অ’ভিযোগ তোলা নারী একজন যৌনকর্মী বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুই হাজার টাকা চুক্তিতে আনা হয়েছিল তাকে। শা’রীরিক সম্পর্ক শেষে টাকা না দেওয়ায় তিনি এমন নাটক সাজিয়েছিলেন। তবে মালায় ওই নারী ঘটনাটিকে ধ’র্ষণ বলেই উল্লেখ করেন।

মাম’লার পর গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় সাইফুল ইসলাম নামের এক যুবককে। আদালতে তোলা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। সেখানে এসব তথ্য দেন সাইফুল। পুলিশও তদন্তে এসব তথ্যের সত্যতা পায়।

নারীর অভিযোগ

নবীগঞ্জের দেবপাড়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে বসবাস করেন ওই নারী। তিনি অভিযোগ করেছেন, গত রোববার বিকেল ৫টায় তিনি শেরপুর থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে আত্মীয়র বাড়ি থেকে ফেরার পথে অটোচালকসহ ৩ যুবক তার হাত-পা বেঁধে অপহরণ করে। পরে গভীর রাতে তাকে আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ওই পরিত্যাক্ত ভবনে নিয়ে আরও কয়েকজন যুবকসহ গ’ণধ’র্ষণ করে। পরদিন সকালে তাকে সিএনজিযোগেই আত্মীয়ের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ যা জানিয়েছে

এখন পর্যন্ত ওই নারীর চারটি বিয়ে হয়েছে। অবাধ চলাফেরার কারণে তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে। দ্বিতীয় বিয়েও একই কারণে বিচ্ছেদ হয়। পরে তিনি ওমান চলে যান। কিছুদিন পর ফের দেশে ফিরে আসেন তিনি। তৃতীয় বিয়ে করে কয়েকদিন স্বামীর সংসার করেন ওই নারী। পরে সেটিও ভেঙে যায়। এখন চতুর্থ স্বামীর সঙ্গে তিনি সংসার করছেন।

মা’মলার আ’সামি, ওই নারী ও তার স্বামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন নবীগঞ্জ-বাহুবলের সার্কেল এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী ও হবিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান। এর আগে মা’মলা হলে তারা দুজনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে যা জানতে পারে পুলিশ

আ’সামি সাইফুল আউশকান্দি ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের সাদিক মিয়ার ছেলে। প্রযুক্তির সহায়তায় গত মঙ্গলবার রাতে তাকে একই ইউনিয়নের মিনহাজপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ওই নারী তাদের সহকর্মী জামিলের পরিচিত। তিনি ভাসমান পতিতাবৃত্তি করেন। ঘটনার দিন তারা ৪ বন্ধু ২ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই নারীর সঙ্গে চুক্তি করেন। পরে সিএনজি অটোরিকশা দিয়ে তাকে আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে আসেন। সেখানে শা’রীরিক সম্পর্ক করে তারা।

আ’সামি সাইফুল আরও জানান, ঘটনাস্থলে পরে আরও দুজন আসে। তারাও ওই নারীর সঙ্গে শা’রীরিক সম্পর্ক করতে চায়। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় সবার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে সাইফুলসহ সবাই পালিয়ে আসে। এ কারণেই তার ওপর ধ’র্ষণের অ’ভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগকারী নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। পরে তাকে তার পরিবারের জিম্মায় দিতে চায় পুলিশ। কিন্তু তিনি সেখানে না গিয়ে নিজের চতুর্থ স্বামী ও শাশুড়ির জিম্মায় যেতে চান। হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহর নির্দেশে পরে তাকে সেখানেই যেতে দেওয়া হয়।

গতকাল বুধবার দুপুরে আ’সামি সাইফুলকে হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। পরে বিচারক তাকে জেলে পাঠান। মাম’লার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় মোট ছয়জনের বি’রুদ্ধে মা’মলা করা হয়েছে।

হবিগঞ্জ থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহর নির্দেশে ঘটনা তদন্তে পুলিশের চারটি দল কাজ করে। নবীগঞ্জ-বাহুবলের সার্কেল এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরীসহ তিনি মাঠে থেকে ঘটনার তদন্ত করেন। অভিযোগকারী নারীকে উদ্ধারের পর তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পান তারা। এতে সন্দেহ হলে ওই নারীকে তার স্বামীসহ জিজ্ঞাসাবদ করা হয়। আ’সামি সাইফুলকেও তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

ওসি জানান, ওই নারীর বক্তব্য অসংগলগ্ন। তিনি কখনো বলেন সাতজন তাকে গ’ণধ’র্ষণ করেছেন, কখনো তিনজনের কথা বলছেন। আবার কখনো তিনি ২১ থেকে ১৪ জনের কথা বলেন। বিষয়টি অস্পষ্ট। ধারণা করা যাচ্ছে, ওই নারী একজন যৌনকর্মী। টাকা না পাওয়ায় তিনি ধ’র্ষণ মা’মলা করেছেন। কিন্তু যে মাম’লা হয়েছে, তাতে তিনি ধ’র্ষণ হয়েছেন বলেই উল্লেখ করেছেন। সাইফুল হাজতে আছেন। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছে পুলিশ। সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়

ad

পাঠকের মতামত