339257

ফেসবুকে আ’পত্তিকর ছবি, কিশোরীর আ’ত্মহ’ত্যা

সাতক্ষীরার তালায় ফেসবুকে আ’পত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার জেরে এক কিশোরী আ’ত্মহ’ত্যা করেছে অভিযোগে মা’মলা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝু’লন্ত অবস্থায় তার লা’শ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই কিশোরীর নাম বিউটি মণ্ডল (১৭)। সে উপজেলার কালাগাছী গ্রামের নিতাই মণ্ডলের মেয়ে এবং চলতি বছর এসএসসি পাস করেছিল।

কিশোরীর বাবা নিতাই মণ্ডলের অভিযোগ, মেয়ের ছবি বি’কৃত করে ফেসবুকে ফোন নম্বরসহ ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি ৭ সেপ্টেম্বর তিনি থানায় লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ ব্যবস্থা নিলে হয়তো এমন পরিণতি হতো না।

তবে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন ছিল। আর গাফিলতি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (তালা-পাটকেলঘাটা সার্কেল) হুমায়ূন কবির।

ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, তার মেয়ে বিউটির মুখমণ্ডলের সঙ্গে বি’বস্ত্র এক মেয়ের ছবি জোড়া লাগিয়ে আ’পত্তিকর ছবি বানানো হয়। এরপর আ’পত্তিকর কথা লিখে ও তার মেয়ের মুঠোফোন নম্বর দিয়ে ছবিটি একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। ৩ সেপ্টেম্বর একজন তাকে বিষয়টি জানান। ওই ব্যক্তি ফেসবুকে পোস্ট করা ছবির স্ক্রিনশটও তাকে পাঠান।

তিনি বলেন, তিনি ৭ সেপ্টেম্বর তালা থানায় বিস্তারিত জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় কলাগাছী গ্রামের বাসিন্দা ও দোলুয়া শহীদ জিয়া কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মৃত্যুঞ্জয় রায় (২০) জড়িত বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই বাবার অভিযোগ, পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মেয়ে লোকলজ্জার ভয়ে, অ’পমানে ও কষ্টে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আ’ত্মহ’ত্যা করে।

তালা থানা ওসি মেহেদী রাসেল বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিউটির লা’শ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আজ বৃহস্পতিবার লা’শের ম’য়নাতদ’ন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ম’র্গে পাঠানো হবে।

বুধবার রাতে আ’ত্মহ’ত্যায় প্রচারণার অ’ভিযোগে মৃত্যুঞ্জয়কে আ’সামি করে বিউটির কাকা দীপঙ্কর মণ্ডল মা’মলা করেছেন। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মা’মলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিউটির আ’ত্মহ’ত্যার খবর শুনে ঘরে তালা ঝু’লিয়ে মৃত্যুঞ্জয় ও তার বাবা-মা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তালা ঝুলছে। কেউ বাড়িতে নেই। প্রতিবেশী বিধান সরকার বলেন, বুধবার দুপুর একটার দিকে মৃত্যুঞ্জয়রা বাড়ি থেকে সবাই চলে গেছেন।

বক্তব্য জানতে সকালে মৃত্যুঞ্জয় রায়ের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার বাবা জগদীশ রায় মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনার সঙ্গে আমার ছেলে জ’ড়িত না। আমার ছেলেকে ফাঁ’সানো হচ্ছে।’ বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন কেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভয়ে বাড়ি ছেড়েছি।’

 

ad

পাঠকের মতামত