339109

‘জয় শ্রী রা’ম’ না বলায় ভারতে ট্যাক্সি ড্রাইভারকে হ’ত্যার অভিযোগ

ভারতের উত্তর প্রদেশে এক ট্যাক্সিচালককে খু’ন করা হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির হিন্দি ভার্সনে দেয়া তথ্যমতে, ৪৫ বছর বয়সী নি’হত ট্যাক্সিচালকের নাম আফতাব আলম। তার পরিবারের দাবি, জয় শ্রী’রাম – না বলায় আফতাবকে খু’ন করা হয়েছে। এ দাবির স্বপক্ষে অডিও রেকর্ডও হাজির করেছেন তারা।

এদিকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ট্যাক্সিতে একজন যাত্রী নিয়ে বুলন্দশহর যান আফতাব। তাকে নামিয়ে রাতে ফেরার পথে দুজন যাত্রীকে ট্যাক্সিতে তোলেন। পরে, তাদের হাতেই খু’ন হন তিনি।

এ ব্যাপারে আফতাবের ছেলে ২০ বছর বয়সী মোহাম্মদ সাবির জানিয়েছেন, রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত আটটা নাগাদ আফতাব তাকে ফোন করেন। তিনি তখন একটি টোল প্লাজার কাছে ছিলেন। তার ধারণা হয়েছিল, তিনি ভুল লোককে ট্যাক্সিতে তুলেছেন। তারপর ফোন চালু অবস্থাতেই পাশে রেখে দেন। সারিব কল রেকর্ড করতে শুরু করেন।

ওই রেকর্ডিং থেকে শোনা যায়, একজন বলছেন, ‘জয় শ্রী’রাম বল’। আরেকজন বলছে, ‘ভাই তু জয় শ্রী’রাম বোল’। এর মিনিট পনেরো পরে আফতাবের ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যায়। সাবির প্রথমে দিল্লি পুলিশে ফোন করেন। তারা জানায়, নয়ডায় গৌতম বুদ্ধ নগর থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। সেই নির্দেশ মতো তিনি নয়ডা পুলিশকে ফোন করেন।

পরে, গ্রেটার নয়ডা পুলিশ আফতাবের গাড়িটি উদ্ধার করে। তখনও আফতাব চালকের সিটে বসা ছিলেন। তার মাথায় ভারি জিনিস দিয়ে আ’ঘাত করা হয়েছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। তখন গাড়িতে কোনো আরোহী ছিল না।

আফতাবের ছেলে সাবিরের দাবি, জয় শ্রী’রাম না বলার কারণেই তার বাবাকে খু’ন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত অডিও ক্লিপ তার কাছে সংরক্ষিত আছে।সেই অডিও ক্লিপ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভা’ইরালও হয়েছে।সাবির আরও বলেন, পুলিশ শুধুমাত্র চু’রির কারণে হ’ত্যা এমন এফআইআর লিখেছে।সাবির বলেন, মুসলমান হিসেবে আমাদের বেঁ’চে থাকার অধিকার আছে।

অন্যদিকে, উত্তর প্রদেশ পুলিশ সাবিরের দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, ওই দুই আরোহী মাতা’ল ছিল। তারা ট্যাক্সি চু’রি করার মতলবে উঠেছিল। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, দুজনই পাকা অ’পরাধী। অ’পরাধ ছাড়া এর পিছনে অন্য কোনো মোটিভ নেই।

অবশ্য পুলিশের বলছে, অডিও রেকর্ড তারা শুনেছে, ওই দুই অপ’রাধী অন্য কাউকে জয় শ্রী’রাম বলতে বলছিল। আফতাবকে নয়। গাড়ি যখন থেমেছিল তখন দুই অভিযুক্ত অন্য কাউকে ওই কথা বলছিল। এর মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক বিষয় নেই।

অন্যদিকে ৬৫ বছর বয়সী আফতাব আলমের বাবা মোহাম্মদ তাহির বলছেন, পুলিশের দাবি অনুযায়ী চু’রির উদ্দেশ্যেই আমার সন্তানকে যদি হ’ত্যা করা হয় তবে ট্যাক্সিক্যাবটি চু’রি করা হলো না কেনো। আমার সন্তানকে মেরে রাস্তায় ফেলে দিয়ে ট্যাক্সিক্যাবটি চু’রি করে নিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু সেটি তারা করেনি। শুধু মোবাইল ফোনটি তারা নিয়ে গেছে। এতেই বোঝা যায় আমার সন্তান সা’ম্প্রদায়িক হাম’লায় নি’হত হয়েছেন।

আফতাব আলম ত্রিলোকপুরির বাসিন্দা। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি ট্যাক্সিক্যাব চালান। আফতাবের স্ত্রীসহ তিন সন্তান রয়েছে। এছাড়া রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা। ট্যাক্সিক্যাব চালানোর মাধ্যমেই তিনি এত বড় পরিবারের ভরণ-পোষণ করতেন।

সূত্রঃ- দ্য ওয়ার ডট ইন/ এনডিটিভি (হিন্দি ভার্সন)

ad

পাঠকের মতামত