
চুক্তির চেয়ে ১০ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে ইরান
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী ইরান যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি পেয়েছিল তার থেকে ১০ গুণ বেশি মজুদ করেছে। জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানের কাছে বর্তমানে ২ হাজার ১০৫ কেজি ইউরেনিয়াম রয়েছে।
ইরানের সন্দেহজনক দুটি পরমাণু কেন্দ্রের একটি পরিদর্শন শেষে আইএইএ’ এর পরিদর্শকরা তথ্য জানান। দ্বিতীয় সন্দেহজনক পরমাণু কেন্দ্র থেকে চলতি মাসের শেষের দিকে নমুনা সংগ্রহের কথা রয়েছে। যদিও ইরান বলছে, তাদের পরমাণু কার্যক্রম শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উপায়ে ব্যবহারের জন্য।
২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি সই করে ইরান। বিনিময়ে পরমাণু কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে তেহরানের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
কিন্তু ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে একতরফাভাবে সরে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে ওয়াশিংটন। জবাবে, গেলো বছর থেকে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে যেতে শুরু করে ইরান।
২০১৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী ইরান ততোটুকু ইউরেনিয়াম উৎপাদনের অনুমতি পায় যা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের কাছে মজুদ থাকা ইউরেনিয়ামের ঘনত্ব ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য এ হার ৯০ শতাংশ বা তারও বেশি বাড়াতে হবে।
চুক্তি অনুযায়ী ইরানকে ইউএফ-৬ ঘনত্বের ৩০০ কেজি পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি দেয়া হয়। পরমাণু অস্ত্র তৈরির অনুপাতে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ২০২ দশমিক ৮ কেজি। স্বল্প সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম যার ঘনত্ব ৩ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ ইউ- ২৩৫ এর মধ্যে রয়েছে সেগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য ইউরেনিয়ামের ঘনত্ব ৯০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ করতে হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চাইলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়ায় ইরানকে অনেক দূর যেতে হবে।
গেলো সপ্তাহে ইরান জানায়, পরমাণু চুক্তি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে ভালো উদ্দেশ্যে নিজেদের অস্ত্র পরিদর্শন করতে দিতে রাজি হয়েছে তেহরান। এর আগে, দুটি কেন্দ্রের সম্ভাব্য পরমাণু যন্ত্রপাতি এবং পরমাণু কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশ্নের জবাব না দেয়া বা এড়িয়ে যাওয়ায় ইরানের সমালোচনা করে আইএইএ।
সবশেষ বিবৃতিতে, বৈশ্বিক পরমাণু কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, ইরানের দুটি কেন্দ্র পরিদর্শন এবং সেগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহে আইএইএকে অনুমতি দিয়েছে তেহরান। সংগ্রহ করা নমুনা সংস্থার গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হবে বলেও জানায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা।