338275

ফরাসি প্রেসিডেন্টের ইরাক সফর; আমি ইরাককে সমর্থন জানাতে এসেছি: ম্যাকরন

পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলীতে অধিকতর ভূমিকা পালনের জন্য গত একমাস ধরে ফ্রান্স সরকার ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে। এই তৎপরতার অংশ হিসেবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন প্রথমে লেবানন সফরে যান এবং সেখান থেকে তিনি ইরাক সফরে আসেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট বাগদাদ সফরে এলে তাকে ব্যাপকভাবে সম্বর্ধনা দেয়া হয়। এরপর তিনি ইরাকের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমি, প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহ এবং দেশটির পার্লামেন্ট স্পিকার আল হালবুসির সঙ্গে ইরাকের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন। ইরাকে গত ১৭ বছরে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাইরের একটি দেশের প্রেসিডেন্টের এই সাক্ষাৎ নজিরবিহীন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট গতকাল একদিনের বাগদাদ সফরে এসে সে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হন। তিনি বৈরুত সফর শেষ করে বাগদাদে পৌঁছে তার এই সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে এক টুইট বার্তায় বলেছেন, আমি অত্যন্ত কঠিন ও জটিল সময়ে ইরাকের প্রতি সমর্থন ঘোষণার জন্য বাগদাদ সফরে এসেছি।

গত এক সপ্তাহে ফ্রান্সের কোন পদস্থ কর্মকর্তার এটা দ্বিতীয় ইরাক সফর। গত ২৭ আগস্ট ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীও ইরাক সফরে এসে কুর্দিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ধারণা করা হচ্ছে, পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলীতে ইউরোপের প্রভাব ও ভূমিকা কমে যাওয়ায় ওই অঞ্চলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও সামরিক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে আমেরিকা। এ অবস্থায় ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলো বিশেষ করে ফ্রান্স পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলীতে আরো বেশি অংশ গ্রহণের মাধ্যমে নিজের স্বার্থ রক্ষার চিন্তাভাবনা করছে। লেবাননে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ফ্রান্সকে এু সুযোগ এনে দিয়েছে। গত চার আগস্ট লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিস্ফোরণের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন দুইবার সে দেশ সফর করেন এবং ওই দেশটির সাংবিধানিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব তুলে ধরেন। ধারণা করা হচ্ছে লেবাননের প্রেসিডেন্ট পশ্চিম এশিয়ার ব্যাপারে আরো বেশি ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছেন। তিনি মনে করেন, ইরাকের নাজুক পরিস্থিতিতে সে দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বিস্তারের মাধ্যমে সেখানে ফ্রান্সের প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্র তৈরি হবে।

ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দামের শাসনামলে ইরানের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের সময় ফ্রান্স সরকার সাদ্দামকে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল। বর্তমানে আমেরিকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফ্রান্স সরকারও ইরাকের সামরিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে নিজের উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাক পুনর্গঠন, শরণার্থীদেরকে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনা এবং সন্ত্রাসীদের নির্মূলের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। ইরাকে আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন আমরা দেশটির পাশে আছি এবং থাকব।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইরান সফরে এসে সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন ইরাকে বাইরের হস্তক্ষেপ সেদেশের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে যা কিনা সে দেশটির সরকারের জন্য হবে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ইরাকের কর্মকর্তাদের উচিত উত্তেজনার অবসান এবং বাইরের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হয়ে নিজের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। পার্সটুডে

 

ad

পাঠকের মতামত