ইউএনও’র ওপর হা’মলা: সিসি ক্যামেরায় দুই যুবক
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হা’মলাকারী দুজন তরুণ বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি জানান, তাদের গড়ন হালকা স্বাস্থ্যের।
বৃহস্পতিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন ওয়াহিদা খানমকে দেখতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
হা’মলাকারীদের চিহ্নিত করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত কারণ জানা যায়নি। তদন্ত চলছে, কারণ বের করার চেষ্টা চলছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে হালকা স্বাস্থ্যের দুজন তরুণ। তবে তাদের চেহারা পুরো বোঝা যাচ্ছে না। হাতুড়ি জাতীয় কিছু দিয়ে আ’ঘাত করেছে। হা’মলাকারীদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন তিনি আশাবাদী, খুব দ্রুত গ্রেপ্তার করতে পারবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আ’হত ইউএনওকে সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও নির্দেশ আছে। এর আগে, ওয়াহিদা খানমকে বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে আনা হয়।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে সরকারি বাসভবনে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে পি’টিয়ে আ’হত করে দুষ্কৃতকারীরা। গুরুতর অবস্থায় তাদের প্রথমে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে রংপুর কমিউনিটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার বাবা ওমর আলী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওয়াহিদা খানমের বাবার নাম ওমর আলী। নওগাঁ থেকে মাঝে মাঝে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন মুক্তিযোদ্ধা বাবা ওমর আলী। ওয়াহিদা খানমের স্বামী মেজবাহুল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তাদের তিন বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। হামলার সময় শিশুটি ঘুমন্ত ছিল। বর্তমানে সে ভালো আছে।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাহমুদুল আলম জানান, আনুমানিক রাত ৩টার দিকে ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে দুর্বৃ’ত্তরা প্রবেশ করে। প্রথমে তার বাবাকে ‘আহত করে পাশের ঘরে বাথরুমে আট’কে রাখে। পরে ওয়াহিদা খানমের ওপর হাম’লা চালায়। এলোপাতাড়ি তাকেও পি’টিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃ’ত্তরা।
মূলত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে হ’ত্যার উদ্দেশেই এ হাম’লা চালানো হয়েছে বলে ধারণা জেলা প্রশাসকের। ঘটনার পর জেলা প্রশাসকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা-ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, প্রথমে নির্বাহী কর্মকর্তার বাবাকে আ’হত করে বাথরুমে আ’টকে রাখে। এরপর নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে পি’টিয়ে গুরুতর আ’হত করে। বাসভবনের নাইট গার্ডকে তালা দিয়ে আট’কে রাখে। কাজের মেয়েও নিচে ছিল।
এটি কোনো ডা’কাতি ছিল না, সম্ভবত হত্যার উদ্দেশেই এ হাম’লা চালানো হয়েছে বলে মনে করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে বিকেল ৪টার দিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্স হাসপাতালের চিকিৎসক প্রফেসর জাহিদ বলেছেন, ‘উনি সংকটাপন্ন অবস্থাতেই আছেন, উনার ব্লাড প্রেশার, পালস যদি উন্নতি না করে এবং জ্ঞানের মাত্রা যদি আরো ডিটোরেট করে, তাহলে উনি যথেষ্ঠ বিপজ্জনক অবস্থায় আছেন, যেকোনো সময় দু’র্ঘটনা ঘটতেও পারে। তবে আমরা আশা করছি উন্নতি হয়ে যাবে, বাকিটা আল্লাহ ভরসা।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই মুহূর্তে যে অপারেশন প্রয়োজন তা করা যাচ্ছে না। তাকে এই মুহূর্তে কোনোভাবেই তার অ’স্ত্রোপচার সম্ভব নয়। বিদেশে নেওয়ার জন্য যে শা’রীরিক সক্ষমতার প্রয়োজন তা নেই ওয়াহিদার। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া বা পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া আর কিছুই নেই। তাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।