337562

‘ইসরাইল বয়কট’ আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াল দুবাই

ইসরাইলের কোম্পানিগুলোকে সে দেশে বৈধভাবে ব্যবসায় করার অনুমতি দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশ দিয়েছে সংযুক্ত আবর-আমিরাত সরকার। এতে করে দেশ দু’টির মধ্যে আর্থিক কার্যক্রমে আর কোনো বাধা থাকলো না।

শনিবার (২৯ আগস্ট) দুবাইয়ের স্থানীয় গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর দিয়েছে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াকালাত আনবা’আ আল ইমারাত (ডব্লিউএএম) জানিয়েছে,শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের নির্দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বয়কট বন্ধের এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।ফলে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের সবগুলো অঞ্চলেই ব্যবসায় করার অনুমতি পেলো ইসরাইল। একই সঙ্গে আরব-আমিরাত গঠনের পর ১৯৭২ সালে করা একটি আইনে বলা হয়েছিলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের আগ পর্যন্ত ইসরাইলের সঙ্গে কোনো ধরণের সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। শনিবারের এই নির্দেশনার ফলে ওই আইনটি কার্যত বাতিল হয়ে গেল।

ফলে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের অবৈধ দখল দারিত্বক কার্যত সমর্থন দিলো দুবাই। গত ১৩ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেস্থতায় ইসরাইল-আমিরাত একটি চুক্তি হয়।ওই চুক্তির ফলে এই সিদ্ধান্ত নিলো দুবাই। তবে চুক্তি অনুযায়ী ফিলিস্তিনে ইসরেইল হামলা বন্ধ এবং দখল করা ভূমি ছেড়ে দেবে বলে জানিয়েছিল দু’বাই সরকার। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। এবং সম্পর্ক স্বাভাবিকি করণ চুক্তির পর পশ্চিম তীরে ইসরাইল হামলা আরো জোরদার কর হয়। যা অব্যাহতভাবে প্রতিদিনই চলছে।

এই নির্দেশনার ফলে এই প্রথমবার ইসরায়েলের পতাকা উড়বে কোনো মুসলিম দেশে। সোমবার ইসরাইলের পতাকাবাহী একটি বিমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জেরাড কুশনারসহ ইসরাইলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা দুবাই আসবেন।

ইসরাইল-আমিরাত সম্পর্ক স্বাভাবিকি করণ চুক্তির নিন্দা জানিয়েছে বেশ কিছু আরব দেশ। ফিলিস্তিন কর্তৃক্ষ এই চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, দুবাই কার্যত স্বাধীন ফিলিস্তিন এবং ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, ‘এই চুক্তি কার্যত ফিলিস্তিনের জনগণের পিঠে গোপনে পেছন থেকে ‘বিষ মাখা’ ছুরি বসানোর সামিল।’

হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই চুক্তি ইয়াহুদিদের অবৈধ কার্যক্রমকে সমর্থন দিচ্ছে। যা গোটা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে বেইমানি। একই সঙ্গে পৃথিবীতে কোনো জাতির বিরুদ্ধে চালানো সন্ত্রাসবাদকে আনুষ্ঠানিক বৈধতা দেয়া হল।’

ফিলিস্তিনের শাসক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রক দল ফাতাহ বলেছে, ‘আমিরাত সত্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা নিজেদের ধর্ম এবং স্বজাতির বিরুদ্ধ নীতি গ্রহণ করেছে।’ ফিলিস্তিন স্বাধীনতা আন্দোলন (পিএলও) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসরাইল তাদের সন্ত্রাসি কার্যক্রমের জন্য শাস্তি না পেয়ে পুরস্কার পেয়েছে আরব আমিরাতের কাছ থেকে।’ জডান ও মিশরের পর আমিরাত তৃতিয় দেশ হিসেবে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা এবং বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করলো।

এদিকে, অধিকৃত পশ্চিম-তীর থেকে ইহুদি বসতি সরিয়ে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন ইসরাইলের উচ্চ আদালত। ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি দখল করে পশ্চিম তীরে যেসব ইহুদি বসতি গড়ে তোলে ইসরেইল। সেগুলো দ্রুত সরানোর নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।

ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে জেলা আদালতের দেয়া রায়কে বাতিল করে নতুন এই রায় দেন ইসরাইলি আদালত। ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীরকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ হিসেবেই চায়। ওখানে ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করেন। এর মধ্যে বসতি গড়ে তুলেছেন প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ইসরাইলি।

ad

পাঠকের মতামত