330265

লকডাউন নয়, ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকুক লোহাগড়া : মাশরাফি

নড়াইলের লোহাগড়াকে পূর্ণ আইসোলেট করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

সোমবার (০৬ জুলাই) লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জরুরি এক সভায় এ আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে করোনা মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে এলাকাকে সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানান মাশরাফি।

অসুস্থ শরীর নিয়ে দীর্ঘক্ষণ সভায় উপস্থিত থেকে সবার বক্তব্য শোনেন মাশরাফি। এ সময় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যসহ যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

মাশরাফি বলেন, লকডাউন শব্দটি এখন সবার কাছে আবেদন হারিয়েছে বলে আমার মনে হয়। তাই লকডাউন নয়, আমি বলতে চাই- লোহাগড়া ইজ আন্ডার আইসোলেশন।

নিজের বক্তব্যে ১০টি বিষয় উল্লেখ করেন মাশরাফি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ১০ জন করে স্বেচ্ছাসেবী টিম গঠন করা। যেখানে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ এলাকার সচেতন মানুষ থাকবে। চলমান পরিস্থিতিতে একসঙ্গে টিমওয়ার্ক করলে সবার মাঝে একটি ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি হবে বলে মনে করেন মাশরাফি।

পাশাপাশি করোনা পরীক্ষার পরিমাণ বাড়িয়ে পজিটিভদের আইসোলেট করা এবং নেগেটিভরা যেন ঘরের বাইরে না যায় এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আশানুরূপ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মত দেন মাশরাফি। একই সঙ্গে আইসোলেট লোহাগড়া করার লক্ষ্যে লোহাগড়ার সঙ্গে কয়েক দিনের জন্য সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়েও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মাশরাফি বলেন, আগামী ১৪ দিন লোহাগড়া আইসোলেটেড থাকুক। এটা আমার সিদ্ধান্ত। তবে আমার সিদ্ধান্তকে আমি চূড়ান্ত মনে করি না। আপনারা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন। আশা রাখবো; লোহাগড়াকে ভালো রাখতে আপনারা সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেবেন।

বণিক সমিতির নেতাদের উদ্দেশ্যে মাশরাফি বলেন, আমার সিদ্ধান্ত আমি আপনাদের ওপর চাপিয়ে দেব না। আপনারা লোহাগড়ার মানুষ, লোহাগড়ার স্বার্থে আপনারা একটি ভালো সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা সবাই জানি এতো দিন আপনারা কষ্ট করেছেন, নিজেদের সুরক্ষার জন্য আপনারা আরেকটু সহযোগিতা করবেন বলে প্রত্যাশা রাখি।

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমি আমার সন্তানদের কাছ থেকে ১৭ দিন বিচ্ছিন্ন আছি, একজন বাবা হিসেবে এটা কতটা কষ্টের তা বলে বোঝানো যাবে না। আমি আমার পরিবারের সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন আছি। তারা আমার কাছে আসতে পারছেন না। এটি অনেক বেদনার। আমি আক্রান্ত হলেও সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করব লোহাগড়ার জনগণের জন্য। আমি শুধু আপনাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। হয়তো আমরা করোনাকে আটকাতে পারব না, তবে একমত হয়ে কাজ শুরু করলে এলাকাকে নিরাপদ রাখতে পারব।’

অলোচনা সভায় মাশরাফির বক্তব্যকে সমর্থন দিয়ে এটি বাস্তবায়নে সবাই একমত বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র, লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা, সাংবাদিক নেতা, লোহাগড়া ও লক্ষ্মীপাশা বণিক সমিতির নেতারা।

ad

পাঠকের মতামত