322232

দাগের ভিতর খেলো, নার্সারিতে সামাজিক দূরত্ব মানার করুণ দৃশ্য!

ডেস্ক রিপোর্ট।। করোনাভাইরাসের সং’ক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চলছে কঠোর লকডাউন। ফলে শিশুরা বাড়ির বাইরে যেতে পারছে না। খেলতে পারছে না। তবে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লকডাউনের এই সময়ে বাচ্চারা কী করবে সেটা নিয়েও ঝামেলায় পড়েছেন অভিভাবকরা। তারা বুঝতে পারছেন না যে বাচ্চারা কী করতে পারবে আর কী পারবে না। এসময়ে কি তাদেরকে ঘরের বাইরে মাঠে ও পার্কে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে দেওয়া উচিৎ? সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখার অর্থ কি তাদের খেলাধুলাও বন্ধ?

ফ্রান্সের নার্সারী স্কুলের বাচ্চাদের লকডাউনে সামাজিদ দূরত্ব বজায় রেখে খেলার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, স্কুলে খোলা মাটিতে চক দিয়ে আঁকানো স্কোয়ারগুলোতে একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে খেলতে বাধ্য হচ্ছে শিশুরা। ছবিগুলো দেখে ফ্রান্সে দুঃখ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলজিয়ামের সীমান্তবর্তী উত্তরের শহর টুরকোইংয়ে ছবিটি তুলেছিলেন টিভি সাংবাদিক লিওনেল টপ। ছবিটিতে সাতটি শিশুকে চক দিয়ে আঁকানো স্কোয়ার দ্বারা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় খেলতে চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে।

ফ্রান্স সরকার প্রায় দুই মাসের করোনভাইরাস লকডাউনের নিষেধাজ্ঞাগুলো কিছুটা শিথিল করার পরে এই সপ্তাহে প্রায় ১৫ লাখ নার্সারী ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে এসেছে।

লিওনেল টপ বলেছেন, ‘শিশুরা আজ ফিরে আসছেন খুব অদ্ভুত, এমনকি অশান্ত পরিবেশও। বিনোদনের সুযোগ নেওয়ার সময়েও দূরত্ব নিশ্চিত করতে মাটিতে স্কোয়ার আঁকা গন্ডির ভেতরে খেলতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের। এই দৃশ্য খু্বই ম’র্মান্তিক।’

তিনি আরো যোগ করেছেন, ‘বাচ্চাদের গন্ডির ভেতরে খেলা, নাচ, লাফ, একসাথে হাসি…আমরা যা দেখেছি, সেগুলো আসলে শা’স্তি হিসাবে নয়।’

শিক্ষাবিদ লরেন্স ডি কক তার টুইটারে ছবিটি পোস্ট করেছেন এবং লিখেছেন, ‘আমি এটি পেতে পারি না। এই চিত্রটি হৃদয়বিদারক। আমরা এটাকে স্কুল বলতে পারি না।’

ছবিটি টুইটারে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে। অনেকে শিশুদের বন্দী বলে মনে হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন এবং অমানবিক হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

একজন ব্যক্তি বলেছেন, ‘মানুষ যদি সামাজিক প্রাণী হয় তবে এই দূরত্ব মানবতা কেড়ে নেয়। এটি আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যতের জন্য রাক্ষসী।’

প্যারিসের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র দ্য মিররকে বলেছেন, সরকার স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য চক স্কোয়ার আঁকার বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়নি, তবে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।

দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় দিনে ফ্রান্সের মৃতের সংখ্যা স্পেনকেও ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃ’ত্যু হয়েছে ২৬ হাজার ৯৯১ জনের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ইতালির পরে ফ্রান্সে কভিড -১৯ মৃ’ত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রা’ণহা’নির ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। সূত্র- ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে।

ad

পাঠকের মতামত