
মাত্র ৬০০ রুপির জন্য ক্রিকেটার হতে পারেননি ইরফান
নিউজ ডেস্ক।। আজ বুধবার উপমহাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে একটি শোকের দিন। আজ পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন প্রখ্যাত বলিউড অভিনেতা ইরফান খান। দুই বছর ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। ভারতীয় অভিনেতা হিসাবে হলিউডে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন একাধিক সিনেমায় অভিনয় করে।
অস্কার প্রাপ্ত লাইফ অফ পাই, ইনফারনো সহ একাধিক সিনেমায় চুটিয়ে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু জানেন কি, ইরফান খান অভিনেতা না হয়ে ক্রিকেটারও হতে পারতেন?
অনেকেই জানেন না অভিনেতা নয়, ইরফানের স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হয়ে ওঠা। তবে সেই স্বপ্ন সফল হয়নি মাত্র ৬০০রুপির জন্য। আশ্চর্য মনে হলেও, এমনটাই সত্যি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সূচনা লগ্ন যাকে ধরা হয় সেই সিকে নাইডু ট্রফিতে অংশ নেওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল ৬০০ রুপি। তবে সেই রুপি জোগাড় করতে পারেননি তিনি।
অনেক আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরফান খান বলেছিলেন, ‘ক্রিকেট খেলে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। আমি ছিলাম অল-রাউন্ডার এবং জয়পুর দলে আমিই ছিলাম সর্বকনিষ্ঠ। সিকে নাইডু ট্রফিতে নির্বাচিতও হয়েছিলাম। তবে সেই টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য ৬০০ রুপি দরকার ছিল। জানতাম না কার কাছে রুপির জন্য হাত পাতবো। সেদিনই ঠিক করে নিয়েছিলাম, ক্রিকেটার হতে পারব না।’
এরপরেই ক্রিকেট ছেড়ে তিনি অভিনয় জগতের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ভারতের ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় ভর্তি হওয়ার জন্য ৩০০ রুপি প্রয়োজন ছিল। সেই সময় ইরফানের পাশে দাঁড়ান তার বোন। সেই ঘটনা স্মরণ করে অভিনেতা বলেছিলেন, ‘ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় ভর্তি হওয়ার জন্য ৩০০ রুপির প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেই অর্থ জোগাড় করা আমার কাছে কঠিন ছিল। আমার বোন আমাকে সেই অর্থ জোগাড় করে দিয়েছিল।’
ক্রিকেট ও অভিনয় দুই জগতের মধ্যে তুলনা করতে গিয়ে ইরফান বলেছিলেন, ‘ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত সচেতনভাবে নিয়েছিলাম। ক্রিকেটে দেশ থেকে মাত্র ১১ জনই সুযোগ পাবে। অভিনেতা কিন্তু অনেক থাকতে পারে। সেই সঙ্গে অভিনয় জগতে বয়সের কোনো ব্যাপার নেই। অভিনেতা নিজেই নিজের অস্ত্র। যত পরিশ্রম করবে ততই সাফল্য আসবে।’
ক্রিকেট ছেড়ে দিলেও ক্রিকেট নিয়ে বিশুদ্ধবাদী ছিলেন। টেস্ট ক্রিকেট ভালোবাসতেন। অধুনা টি টোয়েন্টি ফরম্যাটকে তিনি একেবারেই পছন্দ করতেন না।। ২০১৪ সালে ইরফান খান বলেছিলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কেবল সময়ের অপচয়। টেস্ট ক্রিকেটের নাটকীয়তা এবং চার্ম ছেড়ে এই টি টোয়েন্টি খেলা ক্রিকেটকে ধর্ষণ করছে।’