318528

জমিসহ ঘর ও দোকান পাচ্ছেন সেই ভিক্ষুক

নিউজ ডেস্ক।। শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘরবন্দী হওয়া কর্মহীন মানুষদের খাদ্য সহায়তার জন্য খোলা তহবিলে ১০ হাজার টাকা দান করা সেই ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন (৮০) পাচ্ছেন জমিসহ ঘর ও দোকান।

আজ বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নজিমুদ্দিন উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।

গতকাল মঙ্গলবার করোনা তহবিলে দান করার পর ‘কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তায় ১০ হাজার টাকা দান ভিক্ষুকের!’ শিরোনামে দৈনিক আমাদের সময়ের অনলাইনসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে তাকে নিয়ে প্রচারিত সংবাদটি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। এরপরই ওই ভিক্ষুককে ঘর তুলে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, ‘কর্মহীন মানুষদের খাদ্য সহায়তার জন্য খোলা করোনা তহবিলে ১০ হাজার টাকা দান করার সংবাদটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সংবাদটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। বুধবার সন্ধ্যার পরেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফোন করে ভিক্ষুকের জন্য বাড়ির ডিজাইন এবং প্রাক্কলন তৈরি করে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।’

পরে রাতেই ওই ভিক্ষুকের বাড়িতে গিয়ে বসতভিটার কাগজপত্র দেখা হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায় তার যে জমিটা আছে তা নিষ্কণ্টক নয়। তাই তাকে উপজেলার নিকটবর্তী আমাদের যে সকল সরকারি খাস জমি আছে, সেখান থেকে ১২ শতাংশ জমি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ওই জমিতে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবিএম এহছানুল মামুন বলেন, ‘ভিক্ষুক নজিমুদ্দিনকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। তাকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মুদি দোকানও দিয়ে দেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, করোনা তহবিলে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বাতিয়াগাঁও এলাকায় ইউএনও রুবেল মাহমুদের হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন নজিমুদ্দিন। নিজের বাড়ি মেরামতের জন্য দুই বছরে ভিক্ষা করে ওই টাকা জমিয়েছিলেন তিনি।

টাকা দানের সময় ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলেন, ‘আমি ভিক্ষা করে খাইয়ে-খুইয়ে দুই বছরে এ টেহা জড়ো করছি। আমার ঘরডা ভাঙে গেছে গ্যা। এহন আর ঘর-দরজা দিলাম না। দশে এহন (মানুষ) কষ্ট করতাছে, আমি এ টেহ্যা ইউএনও সাহেবের হাতে দিলাম। দশেরে দিয়ে দেখ, খাইয়ে বাঁচুক।’

বিষয়টি হতবাক করে তোলে ইউএনও, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ উপস্থিত সবাইকে। পরে এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ad

পাঠকের মতামত