
গতবছর সৌদিতে রেকর্ড সংখ্যক মৃ’ত্যু’দণ্ড কার্যকর
নিউজ ডেস্ক।। সৌদি আরবে গত বছর রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ২০১৯ সালে বিভিন্ন অপরাধে কমপক্ষে ১৮৪ জনের শি’রশ্ছে’দ করেছে রিয়াদ। মৃ’ত্যুদ’ণ্ড সাজা ভোগকারীদের অর্ধেকেরও বেশি বিদেশি নাগরিক। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।
গত বছর সৌদিতে মৃ’ত্যুদণ্ড’প্রাপ্ত’দের মধ্যে বেশিরভাগই মা’দ’ক সং’ক্রান্ত’ অপরাধ ও খু’নে’র মা’ম’লার আসামি। তবে দেশটি মৃ’ত্যুদ’ণ্ডকে সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিমদের বি’রু’দ্ধে রাজনৈতিক হ’তিয়া’র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে দাবি করেছে অ্যামনে’স্টি।
২০১৯ সালে একসঙ্গে ৩৭ জনের মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর করেছিল সৌদি সরকার। এদের মধ্যে ৩২ জনই শিয়া মুসলিম। তাদের ব্যাপক নির্যাতনের মাধ্যেমে স’ন্ত্রা’সী কর্মকাণ্ডের স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল বলে দাবি মানবাধিকার সংগঠনটির।
দেশটিতে গত বছর মৃ’ত্যু’দণ্ডপ্রা’প্তদের ছয়জন মাত্র নারী, বাকি ১৭৮ জনই পুরুষ। এর আগের বছর অর্থা ২০১৮ সালে দেশটিতে মৃ’ত্যুদ’ণ্ড দেয়া হয়েছিল ১৪৯ জনকে।
এদিকে, ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ মৃ’ত্যু’দণ্ড দিয়েছে ইরাক। ফলে চীনের পরেই সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু’দ’ণ্ডের রেকর্ড রয়েছে ইরানের। ২০১৯ সালে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে অন্তত ২৫১টি মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এই জরিপে চীন, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো অন্তর্ভুক্তি নেই। কেননা এসব দেশ মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকরের খবর সাধারণত প্রকাশ করে না। অ্যামনেস্টির ধারণা, গত বছরও চীনে হাজারের বিপুল সংখ্যক লোকজনের মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর হয়েছে।
ইরাকে ২০১৮ সালে ৫২টি মৃ’ত্যু’দণ্ড কার্যকর হয়েছিল। গত বছর সেই সংখ্যা একশ’তে পৌঁছেছে। দেশটিতে হঠাৎ করে মৃ’ত্যুদ’ণ্ড বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের মৃ’ত্যুদ’ণ্ড দেয়ার কারণেই সেখানে চরম শাস্তিপ্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
দক্ষিণ সুদানে গত বছর ১১ জনের মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর হয়েছে, যা ২০১১ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালে ইয়েমেনে সাতজনের মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর হয়েছে। দেশটিতে ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র চারজন।
এক বছর বিরতির পর বাহরাইন ও বাংলাদেশেও ফের মৃ’ত্যু’দণ্ড কার্যকর হয়েছে। অ্যামনেস্টির হিসাবে, গত বছর বাহরাইনে তিনজন ও বাংলাদেশে দুইজনের মৃ’ত্যু’দণ্ড কার্যকর হয়েছে।
তবে, ২০১৮ সালের তুলনায় বিশ্বব্যাপী মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকরের হার কমেছে প্রায় পাঁচ শতাংশ। এ নিয়ে টানা চতুর্থ বছর বিশ্বে মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কমলো। গত বছর বিশ্বজুড়ে মৃ’ত্যু’দণ্ড কার্যকর হয়েছে ৬৫৭ জনের, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
২০১৯ সালে ব্যাপক হারে মৃ’ত্যু’দণ্ড কমেছে মিসর, জাপান ও সিঙ্গাপুরে। টানা দ্বিতীয় বছর মৃ’ত্যুদ’ণ্ডের হার কমেছে ইরানেও। ২০১০ সালের পর থেকে প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানে কারও মৃ’ত্যুদ’ণ্ড কার্যকর হয়নি। গত বছর মৃ’ত্যু’দ’ণ্ড দেয়নি এশিয়ার দুই দেশ তাইওয়ান ও থাইল্যান্ডও।
বিশ্বের ১০৬টি দেশ ইতোমধ্যেই মৃ’ত্যুদ’ণ্ডের মতো কঠোর শাস্তি বাতিল করেছে। তবে এখনও এই আ’ই’ন বহাল রয়েছে ১৪২টি দেশে। উৎস: আল জাজিরা