317451

ফেসবুকে চিকিৎসকের ক্ষোভ: ‘এন-৯৫ মাস্ক দিন অথবা মৃত্যুর মাধ্যমে পালাতে দিন’

নিউজ ডেস্ক।। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের একমাত্র করোনা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুল আজাদ ‘এন-৯৫ মাস্ক’ চেয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকসহ স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ফেসবুকে ট্যাগ করে স্ট্যাটাসটিতে তিনি লিখেছেন ‘এন-৯৫ মাস্ক দিন অথবা মৃত্যুর মাধ্যমে পালাতে দিন। আর লোক দেখানো বাজারের ব্যাগের কাপড় দিয়ে তৈরি গাউন দেওয়া বন্ধ করুন।’ খবর: কালের কণ্ঠ ও জাগোনিউজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তিনজন করোনাক্রান্ত রোগীসহ প্রায় ২৩ জন করোনা সন্দিগ্ধ রোগীর একমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এ তরুণ চিকিৎসক মানবিকতার সাথে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন এন ৯৫ মাস্কসহ পর্যাপ্ত সুরক্ষা উপকরণ ছাড়াই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো একজন স্বাস্থ্য কর্মী জানান, শুধু ডাক্তার নয়, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ড ইনচার্জ এবং নার্সদের জন্যেও এন -৯৫ মাস্কসহ প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জামাদি নেই। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে কেরোনা রোগীদের সেবা করে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ডা. আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে একজন চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য কর্মী অসুস্থ হওয়া মানে সংকট আরো বেড়ে যাওয়া। কারণ এমনিতেই সারা দেশে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংকট রয়েছে। তিনি আরো বলেন, মেডিক্যাল টেকনোলোজিস্ট, নার্স, ওয়ার্ড ইনচার্জ এবং ক্লিনারসহ তিনি নিজেও পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী বিশেষ করে এন-৯৫ মাস্ক ছাড়া সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক নিয়ে প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

ডা. আজাদ আরো জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের স্পষ্ট গাইডলাইন রয়েছে যে, যারা করোনা রোগীর সেবায় যাবেন বা নমুনা সংগ্রহ করবেন তাদের অবশ্যই এন-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পিপিই বলতে শুধু গাউনকে বোঝায় না। এর সাথে অবশ্যই এন-৯৫ মাস্ক, প্রটেকটিভ সানগ্লাস, সু-কাভার এবং ফেইস শিল্ড থাকতে হয়। তবেই একজন স্বাস্থকর্মী করোনা রোগী নিয়ে কাজ করতে পারেন।

তিনি বলেন, এই মুহুর্তে যদি বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক বা নার্স অসুস্থ হয়ে পড়েন তবে পুরো সিস্টেমটাই কলাপস্ করতে পারে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. সোহরাব উদ্দিন খান বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসক, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জামাদি পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা সরঞ্জাম এন-৯৫ মাস্কও। তাই প্রতিদিন তারা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে তাদের কাজ করে যাচ্ছেন। সাধারণ নার্স এবং চিকিৎসকদের জন্যও কোনো পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন শাহিন খান বলেন, আমরা যে পিপিই পেয়েছি তার সাথে এন-৯৫ মাস্ক ছিলো না। তবে এ বিষয়টি জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাপত্র পাঠালেও এখনও পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।

ad

পাঠকের মতামত