315430

ব্যারিস্টার সুমন দান করবেন ৪১ দিনের বেতন

নিউজ ডেস্ক।। ক’রোনাভা’ইরাসের কারণে লকডাউনে থাকা অসহায় গরিবদের তার সর্বশেষ ৪৩ দিনের (এক মাস ১১ দিন) বেতনের টাকা দান করবেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। নিজের বেতনের টাকা দান করে সর্বস্তরের মানুষকে উৎসাহিত করতে চান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার সুমন নিজেই। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘করোনার বিস্তার রোধে কার্যত লকডাউন চলছে সারা দেশব্যপী। এর মধ্যে দিন আনে দিন খায় এমন নিম্ন আয়ের মানুষ ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের সংসার চালাতে কষ্ট করতে হচ্ছে। আমি দান করার বিষয়টি প্রকাশ করছি এজন্য যে করোনা মোকাবিলায় শুধু সরকার কেন একা ভাববেন? এটি একটি আন্তর্জাতিক দুর্যোগ। তাই এই দুর্যোগে সরকার কেন একা দায়িত্ব পালন করবে?’ তিনি চান, তার এই কাজে উৎসাহিত হয়ে দেশের হাজারো বিচারক ও আইনজীবীসহ সাংবিধানিক পোস্টধারীরা এগিয়ে আসুক।

সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জানান, বাংলাদেশের পুলিশ নিজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে তাদের বেতনের টাকা প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অনুদান হিসেবে জমা দিয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এলেও সরকারের সচিবসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরিজীবীরা এখনো সাড়া দেননি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্টের বিচারকসহ দেশের সকল বিচারক ও আইনজীবী ও অ্যাটর্নি জেনারেলদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ব্যারিস্টার সুমন। তিনি মনে করেন, নির্বাচন কমিশনারসহ দেশের সাংবিধানিক পোস্টে যারা রয়েছেন, তারা কমপক্ষে এক-দুই দিনের বেতনও যদি প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে দান করেন তাহলে এই দুর্যোগের সময়ে অসহায় মানুষের অনেক উপকার হবে।

‘এজন্য আমি আমার বেতনের টাকা দান করে তা জানিয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে উৎসাহিত করছি’- বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগকারী এই ব্যারিস্টার।

এর আগে গত শনিবার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে নিজের ব্যবহৃত গাড়িটি ডাক্তার এবং চিকিৎসা কাজে ব্যবহারের অনুমতি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সেইসঙ্গে পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) হিসেবে বেশ কিছু রেইনকোটও দিয়েছেন তিনি।

এক ভিডিও বার্তায় সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানান এই ব্যারিস্টার। তিনি বলেন, ‘এই ৭-৮ দিনের মাথায় এই প্রথম আমি বাসা থেকে বের হয়েছি। বের হয়েছি আমার কারণে নয়, দেশের কারণে। আমার বের হওয়া জরুরি। আমি খবর পেলাম, হাসপাতালগুলোতে ডাক্তারদের জন্য যে পরিমাণে পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) থাকা দরকার, তা এখন নেই। সরকার থেকে তা আসছে। আমিও কয়েক জায়গায় খোঁজ নিয়ে প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট পাইনি। আমি ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকটি রেইনকোট ব্যবস্থা করেছি। এই সময় নাকি, রেইনকোটও কাজে লাগে। তাই এগুলো নিয়ে এসেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার এই গাড়িটা, আমি ঢাকায় ব্যবহার করি। লকডাউনের কারণে এটি এখন কোনো কাজে লাগছে না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই গাড়িটা হাসপাতালে এবং যেখানে লাগবে সেখানে আমি দিয়ে দিতে চাই। আমি ডাক্তার সাহেবদের বলেছি, তারা আমাকে জানিয়েছেন, এখন এই সময় তাদের গাড়িটি লাগবে না। যখনই তাদের দরকার হবে তারা গাড়িটি নিতে পারবেন।’

সিলেটের চুনারুঘাট হবিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে দাঁড়িয়ে সুমন আহ্বান জানান, যাদের গাড়ি বেশি আছে তারা যদি নিজ জন্মস্থানের হাসপাতালে একটি গাড়ি দিয়ে রাখেন, তাহলে ডাক্তারদের সুবিধা হবে। এ সময় যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ারও আহ্বান জানান সুমন।

ad

পাঠকের মতামত