298144

ভরণ পোষণ ঠিকমতো দিতে না পারায় দুই মেয়েকে হত্যা করেছেন দরিদ্র বাবা!

সন্তানদের ভরণ পোষণ ঠিকমতো দিতে না পারায় নরসিংদীতে শিশু দুই মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন দরিদ্র এক বাবা। আটকের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বাবা শফিকুল ইসলাম।আজ শনিবার (২৫ মে) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহাম্মেদ।

নিহত দুজন হলো মনোহরদী উপজেলার চালাকচর গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে তাইন (১১) ও তাইবা (৪)। শফিকুল ইসলাম পোশাক তৈরির একটি কারখানায় নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করেন।

উল্লেখ্য যে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নরসিংদী পৌর শহরের লঞ্চ টার্মিনালের বাথরুম থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, তাদের শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর মরদেহ ফেলে রেখে যেতে পারে দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ জানিয়েছে, নরসিংদী পৌর শহরের লঞ্চ টার্মিনালের বাথরুমে দুই জনের মরদেহ পড়ে আছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা ঘটনাস্থলে যায়। এরপর বাথরুমে একটি শিশু ও এক কিশোরীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে।

খবর পেয়ে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন (বিপিএম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেনসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।এরপর থেকে তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমে নিহতদের বাবা শফিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে মনোহরদী গ্রামের বাড়ি থেকে দুই সন্তানকে শিবপুর নিয়ে আসেন শফিকুল ইসলাম। চিকিৎসক না থাকায় তিনি তাঁর সন্তানদের নরসিংদী লঞ্চ টার্মিনালে ঘুরতে নিয়ে আসেন। ওই সময় ছোট মেয়ে তাঁর কাছে লিচু খেতে চায়। কিন্তু তাঁর কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না।

তার ওপর সামনে ঈদ। সংসারের খরচ ও সন্তানদের জামা-কাপড় দিতে হবে। এসব ভেবে শফিকুল হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে যান। এরপর প্রথমে ছোট মেয়েকে লঞ্চ টার্মিনালের বাথরুমে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে বড় মেয়েকে একই কায়দায় হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো মামলা করেনি। পরিবার মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

মিরাজ উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, প্রাথমিকভাবে শফিকুল ইসলামকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে। তিনি একেকবার একেক রকম কথা বলছেন।

নরসিংদী পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন (বিপিএম) বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অন্য কোথাও শ্বাসরুদ্ধ করে তাদের হত্যার পর লঞ্চযোগে মরদহ এখানে ফেলে রেখে গেছে। নিহতদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ঘটনার পর থেকেই পুলিশের কয়েকটি টিম তদন্ত শুরু করেছে।

ad

পাঠকের মতামত