297982

মক্কা হামলায় ইরানকে কঠোর শাস্তি দেয়ার দাবি

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কা এবং মদিনা লক্ষ্য করে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। দেশটির বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, তারা মক্কা এবং জেদ্দার দিকে ধেয়ে আসা দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করেছে। এই হামলার ঘটনায় ইরান এবং হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে রিয়াদ। মক্কা লক্ষ্য করে চালানো এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়েছে বাহরাইন ও ইয়েমেনের সরকার। খবর: আরব নিউজ।

এর আগে সোমবার মক্কার তায়েফ এবং জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরের পাশে দুটি ক্ষেপণাস্ত্রে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী। সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোট বলছে, ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি এই হামলা চালিয়েছে।

এদিকে মক্কায় ও জেদ্দায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরদিন মঙ্গলবার সৌদির নাজরান প্রদেশে বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোন হামলা হয়েছে। আরব জোটের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সোমবার ভোরের দিকে তায়েফের আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। ধ্বংস করার সময় প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটির কিছু টুকরা মক্কার ওয়াদি জলিল উপত্যকার দিকে পড়েছে।

জেদ্দার বাসিন্দারা বলেছেন, সোমবার ভোরের দিকে তারা প্রচণ্ড বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনেছেন। মক্কাকে লক্ষ্য করে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ২০১৭ সালের জুলাইয়েও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের আকাশে দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করছে সৌদি প্রতিরক্ষাবাহিনী।

মক্কা লক্ষ্য করে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়েছে বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র দুটি ধ্বংস করায় সৌদি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রশংসা করেছে বাহরাইন। রিয়াদভিত্তিক সৌদির রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ড. হামদান আল-শেহরি বলেন, হুথি এবং তেহরানে থাকা তাদের প্রভূরা পবিত্র নগরী মক্কা লক্ষ্য করে প্রথমবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে; বিষয়টি তেমন নয়। ইসলামের পবিত্রতম স্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাতে তাদের বিবেকের কোনো দংশন নেই।

আল শেহরি বলেন, তারা পবিত্র রমজান মাসের পবিত্রতার কোনো তোয়াক্কা করে না। আজ তারা যা করছে এবং অতীতে যা করেছে; তাতে পরিষ্কার হয়েছে যে, মুসলিম বিশ্বের প্রাণ কেন্দ্রে হামলার নকশা করেছে তারা।

তিনি বলেন, ‘পবিত্র ভূমিকে রক্ষার জন্য মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে আসার এখনই উপযুক্ত সময়। আমাদের পবিত্র স্থাপনা ইরান, হুথি এবং মিলিশিয়াদের হামলার শিকার।’ আল শেহরি বলেন, শুধুমাত্র নিন্দা জানালেই হবে না। ইরান এবং হুথিরা শেষ সীমা অতিক্রম করেছে। তেহরানের বিরুদ্ধে এখনই কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে। সৌদিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন সরকার। মক্কা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে পুরো মাত্রার সন্ত্রাসী আক্রমণ বলে মন্তব্য করেছে সানা।

অন্যদিকে, জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদাল্লাহ আল-মোয়াল্লিমি বলেছেন, গত ১৪ মে সৌদির দাওয়াদমি ও আফিফ শহরে তেল স্থাপনা লক্ষ্য করে বিস্ফোরক বোঝাই সাতটি ড্রোন ছুড়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।ইয়ানবু বন্দর হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তেলের সরবরাহ করা হয় সৌদির পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলের এই তেল স্থাপনা থেকে। ২০১৫ সালের মাঝের দিকে থেকে এখন পর্যন্ত হুথিদের ছোড়া কমপক্ষে ২২৭টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে সৌদি প্রতিরক্ষা বাহিনী।

ad

পাঠকের মতামত