297652

দরিদ্র বাচ্চু মিয়ার জমির ধান কেটে দিল শিক্ষার্থীরা

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগর ইউনিয়নের ডহর পাড়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু হাওলাদারের জমির বোরো ধান কেটে দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশালের বিভিন্ন কলেজের ছাত্ররা কৃষক বাচ্চুর এক একর জমির ধান কাটা শুরু করে।আর্থিক অসচ্ছলতা এবং শ্রমিক সঙ্কটের কারণে পাকা ধান কাটতে পারছিলেন না বাচ্চু হাওলাদার। ধানের দামও কম থাকায় ছাত্ররা কৃষকের এই ধান কেটে দেয়ার উদ্যোগ নেয়।

বংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নামে একটি ছাত্র সংগঠনের বরিশালের আহ্বায়ক বিএম কলেজের স্নাতক বিভাগের শিক্ষার্থী নবীন আহম্মেদ এই দলের নেতৃত্ব দেন। তার সঙ্গে ছিলেন একই সংগঠনের সদস্য বরিশাল সিটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক মানবিক শাখার ছাত্র সাইদুল ইসলাম শাকিব, পটুয়াখালীর কদমতলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র আরিফুর রহমান, বরিশাল পলিটেকনিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মিশু মিয়া ও হাতেম আলী কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. সেজান। তারা সবাই দুপুর ২টায় কৃষক বাচ্চুর জমিতে ধান কাটায় নেমে পরেন।

দলনেতা বরিশাল ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক নবীন আহম্মেদ বলেন, সারা দেশে ভাল ফলন হলেও কৃষকরা ধানের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। এর পাশাপাশি শ্রমিক সংকট থাকায় অধিক মূল্যে পারিশ্রমিক দিয়ে কৃষকের ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা নলছিটির এই ডহরপাড়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়ার জমির ধান কেটে তাকে সহযোগিতা করছি। আমরা ধান কেটে দেয়ায় শ্রমিক মজুরি না দিয়ে কৃষক বাচ্চু মিয়া এই ধান বিক্রি করে হয়তো কিছুটা হলেও লাভবান হতে পারে।অপর শিক্ষার্থী মিশু মিয়া বলেন, আমরা এই কৃষকের শুধু ধান কেটেই দেব না, বাড়ি পর্যন্ত ধান নিয়ে দেব।

এই প্রসঙ্গে কৃষক বাচ্চু হাওলাদার জানান, অর্থাভাবে শ্রমিক দিয়ে আমার এই ধান কাটা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি সম্প্রতি ঘুর্নিঝড় ফণির প্রভাবে আমার এক একর জমির ধান পানিতে মিশে গেছে। তাই অগ্রিম এই ধান বিক্রি করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ায় এবং আমি শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারনে এত দিন এই ধান কাটতে পারিনি। ছাত্ররা এসে আমার যে উপকার করেছে এ জন্য আমি তাদের কাছে ঋণী হয়ে থাকবো।

কৃষক বাচ্চু আরও জানান, একজন শ্রমিকের পারিশ্রমিক ৬শ’ টাকা। কিন্তু এক মন ধান ৪শ’ টাকায়ও বিক্রি করতে পারি না। এ অবস্থায় আমার মত গরীবের শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা সম্ভব হয়নি।তিনি বলেন, মগর ইউনিয়নের ডহরপাড়া গ্রামের প্রায় ২শ’ কৃষকের ঘরে ৪ থেকে ৫শ’ মন ধান মজুদ আছে। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা তা বিক্রি করছে না।

ad

পাঠকের মতামত