297382

শাশুড়ি-ননদের দেয়া আগুন বাঁচতে দিল না সজিকে

জেলা প্রতিনিধিঃ পাবনার সুজানগরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দেয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ সজি খাতুন (২৫) মারা গেছেন। ৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানা পুলিশের ওসি মোমিনুল ইসলাম গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঢাকায় সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছাতে রাত হয়ে যাবে। এ ঘটনায় নিহতের ননদ সামেলা খাতুনকে (৩৭) আটক করা হলেও বাকিরা পলাতক রয়েছে। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে ৯ মে (বৃহস্পতিবার) ভোরে পাবনার সুজানগর উপজেলার আমিনপুর থানার তালিমনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পারিবারিক কলহের জের ধরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে গৃহবধূর স্বজনরা অভিযোগ করেন। আগুনে তার শরীরের ৬০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল।নিহত সজি খাতুন সুজানগর উপজেলার আমিনপুর থানার মুরারীপুর গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক ফজিবর মন্ডলের মেয়ে।

ফজিবর মন্ডল জানান, ১২ বছর আগে একই থানার তালিমনগর গ্রামের গেদা মন্ডলের ছেলে সুরমান আলীর (৩০) সঙ্গে তার মেয়ে সজি খাতুনকে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য তার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছিল সজির স্বামী, শাশুড়ি, ননদসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এরই মধ্যে বছর খানেক আগে সুরমান আলী কাজের সন্ধানে মালয়েশিয়া যান। মালয়েশিয়া থেকে তিনি টাকা পাঠাতেন তার বোন (সজির ননদ) সামেলার নামে। সামেলা সুরমানের পাঠানো টাকা থেকে প্রতিমাসে আড়াই থেকে ৩ হাজার করে টাকা দিত সজিকে। এই টাকা দিয়ে সজি ৬ বছর এবং ৪ বছর বয়সী দুই ছেলেকে নিয়ে চলতো। কিন্তু এ টাকায় তার সংসার চলতো না। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ তীব্র হতে থাকে।

দুই মাস আগে সজিকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় শাশুড়ি-ননদ, ভাসুরসহ পরিবারের লোকজন। এ ব্যাপারে আমিনপুর থানায় অভিযোগ দেয়া হলে পুলিশ বুধবার সজিকে দুই সন্তানসহ বাড়িতে তুলে দিয়ে যায়। এরপর ৯ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সজিকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়।

এ সময় দুই সন্তান ও সজির চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ ও স্বজনরা এসে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু পাবনা জেনারেল হাসাপাতাল থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়।

ad

পাঠকের মতামত