296004

বিয়ের আগে যে রোগগুলোর পরীক্ষা করতেই হবে

বিয়ের আগে বর-কনের স্বাস্থ্য পরীক্ষাটা খুব জরুরি। কারণ আপনার রোগের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাবে স্বামী কিংবা স্ত্রী। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হুমকির মুখে পড়ে যেতে পারে। তাই প্রত্যেক বর-কনের বিয়ের আগে কয়েকটি পরীক্ষা অবশ্যই করিয়ে নেওয়া উচিৎ। যদি কারো বড় ধরনের কোনো রোগ থাকে তাহলে আগে থেকে জেনে সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবে। যেটা হয়তো ভবিষ্যতে কোন সমস্যা করবে না। রক্ত পরীক্ষাসহ কিছু পরীক্ষা করা অতিব প্রয়োজন। যেমন থ্যালাসেমিয়া, হেপাটাইটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডসহ কিছু রোগ আছে যেগুলোর পরীক্ষা করা জরুরি।

বিয়ের আগে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করাও খুবই প্রয়োজন। রক্তের গ্রুপের ভিন্নতার কারণে পারিবারিক জীবনে কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে। নেগেটিভ রক্তবহনকারী কোনো নারীর সঙ্গে পজেটিভ কোনো পুরুষের বিয়ে হলে তাদের সন্তান জন্মদানের সময় কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে। এমনকি গর্ভপাত বা শিশুর মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বর-কনে বিয়ে করলে সুখী ও সুন্দর জীবন গঠন করা সম্ভব হবে। বিষেশজ্ঞদের মতে জেনে নেওয়া যাক কোন রোগগুলোর পরীক্ষা জরুরি:

থ্যালাসেমিয়া-যদি কোনো ছেলে এই রোগের বাহক হয় তাহলে দেখতে হবে তার স্ত্রী যেন এর বাহক না হয়। দুজনই এর বাহক হলে অনাগত শিশু এ রোগে আক্রান্ত হবে। এটি এমন একটি রোগ যাতে রক্তের হিমোগ্লাবিনের পরিমান কমে যায়।ফলে রোগীকে প্রতি তিন থেকে আট সপ্তাহ পর পর রক্ত নিতে হতে পারে। আবার নিয়মিত রক্ত নেওয়ার কারণে বাড়তে পারে আয়রন যার ফলে হার্ট, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ জন্য স্বামী স্ত্রী দুজনকেই বিয়ের আগে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিৎ।

যদি বিয়ের আগে জানা না যায় যে, বর-কনে দুজনই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত তাহলে এসব সমস্যায় পড়তে হবেই বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ক্ষেত্রে ডাক্তাররা বাচ্চা না নেওয়ার জন্যই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

গাইনোকলজিক্যাল পরীক্ষা-এই পরীক্ষার মাধ্যমে কনের জেনে নেওয়া উচিৎ তার ইউরেটাস, ওভারিতে কোনো সমস্যা আছে কি না। তাহলে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। এর সঙ্গে ব্রেস্ট পরীক্ষাও করে নিতে হবে।সেই সঙ্গে পুরুষেরও জেনে নিতে হবে তার বীর্যপাতজনিত বা পুরুষাঙ্গে কোনো সমস্যা আছে কি না। যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলে পরীক্ষার মাধ্যমে বিয়ের আগেই চিকিৎসা করাতে পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকরা।

হেপাটাইটিস-বিয়ের আগেই বর-কনে পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিবে তাদের লিভার কেন্দ্রীক কোনো সমস্যা আছে কি না। হেপাটাইটিস-এ, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, ঠিক আছে কিনা এ বিষয়টি বিয়ের আগেই জেনে নিতে হবে।কারণ হেপাটাইটিস সেরে গেলেও কোনো কনে যদি বি বা সি-এ আক্রান্ত হয় তাহলে তার থেকে সংক্রমিত হয়ে স্বামী ও সন্তানের শরীরে যেতে পারে। এ জন্য বিয়ের আগেই হেপাটাইটিস এ ও বি ভ্যাকসিন নিয়ে নেওয়া উচিৎ।

থাইরয়েড-থাইরয়েড বা অ্যানিমিয়া থাকলে পরবর্তী সময়ে সন্তান জন্ম দানের সময় সেটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই আগেই এ পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো। এ ছাড়া অ্যানিমিয়া আক্রান্ত পাত্রীরও বিয়ের পর সন্তান নিতে গেলে অনেক সময়ই সমস্যায় পড়তে হয়।

কিডনি-ইউরিয়া পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে কিডনিতে কোনো সমস্যা আছে কি না। ইউরিয়া বেশি থাকলে পরবর্তীতে বাচ্চার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আগেই এর চিকিৎসা করে নিতে হবে।এছাড়া আরো কিছু রোগ আছে যেগুলো পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা অতীব জরুরি। তার মধ্যে এইডস, মানসিক স্বাস্থ্য, সেক্সুয়াল হেলথ সমস্যা এবং ডয়াবেটিস। এই পরীক্ষাগুলো করার মাধ্যমে কোনো সমস্যা ধরা পড়লে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে নিজেকে তৈরি করে নেবে।

ad

পাঠকের মতামত