295569

ভণ্ড বাবার আস্তানা গুঁড়িয়ে দিলেন ইউএনও! (ভিডিও)

বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী অনিল বড়ুয়া। পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতেন হাটহাজারীর পৌরসভার ১ নম্বর সড়ক আদর্শ গ্রামের উত্তর পাহাড়ে। বিগত ৮ বছর আগে তিনি মারা গেছেন। কথিত আছে, তিনি জীবদ্দশায় ধর্মান্তরিত হয়ে নাম রেখেছিল ইবরাহীম চিশতী। মৃত্যুর পর তাকে স্থানীয় কবরস্থানে এলাকাবাসী কবরস্থ করতে না দেয়ায় তাকে দাফন করা হয়েছিল তার শোবার ঘরে। এর মধ্যে তার কবর ‘বাবার আস্তানা’ নামে বেশ পরিচিত লাভ করে।

আর গত ৬ বছরের ধরে চলছে ওই বাবার বাৎসরিক ওরশ মাহফিল। এছাড়া ওই বাবার আস্তানাকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠান পালিত হতো ঘরোয়াভাবে। সারা রাত নাচ-গানে অতিষ্ঠ আশপাশে বসবাসরত শত শত পরিবার। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ এলাকাবাসী বাবার আস্তানার এসব অপকর্ম সহ্য করে আসছিল। এর মধ্যে হযরত শাহ মুনছুরিয়া দায়রাপাকের ব্যবস্থাপনায় এলাকার নানা স্থানে ব্যানার, পেস্টুন, পোস্টার ও রশিদ বই নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে টাকা উত্তোলন করে আগামী ৩ মে প্রকাশ্যে ওরশ উদযাপন করতে বেশ জোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল।

স্থানীয় লোকজন জানতে পেরে বিষয়টি হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমীনকে অবগত করে। স্থানীয়দের কাছ থেকে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার বিকালে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখানকার লোকজনের অভিযোগ শুনেন। এরপর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ওই ভণ্ড বাবার আস্তানাটি গুড়িয়ে দেন ইউএনও।

এ সময় উপস্থিত স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাটহাজারী বাসস্টেশনের অদুদিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও এলাকার বিতর্কিত ব্যক্তি আবদুল ওহাব আল কাদেরী নামে এক ব্যক্তি এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ইন্ধনদাতা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নারীঘটিত কেলেংকারী। এ ছাড়া সমাজে ফেৎনা সৃষ্টিকরাসহ নানা রকম বিতর্কিত কাজের সঙ্গে তার রয়েছে সম্পৃক্ততা। আবদুল ওহাব আল কাদেরী বলেন, এটি কোনো মাজার না। উনি (ভণ্ডবাবা) কোনো পীরও না। তবে মনছুরাবাদ পীরের মুরিদ ছিলেন। তাই তার কবরকে দায়রা পাক হিসেবে তৈরি করে আমি তার দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম।

এ ওরশের কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে পরে কথা বলব। ইউএনও রুহুল আমীন জানান, ওই এলাকায় অনিল বড়ুয়া নামে এক লোকের মৃত্যুর পর মাজার তৈরি করে তার পরিবারের সদস্যসহ কিছু অসাধু ব্যক্তি। এসব ভণ্ডদের কারণে প্রকৃত অলি-আউলিয়াদের বদনাম রটতে পারে- এজন্য অভিযান চালিয়ে আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, যখন থেকে ভণ্ড বাবার আস্তানায় এসব শুরু হয়েছিল তখনি যদি এসব কার্যক্রম বন্ধ করা হতো তাহলে এ পরিস্থিতি হতো না। তবে সুন্দর সমাজ গড়ে তুলতে এলাকাবাসী এসব বিষয়ে জনমত সৃষ্টি করে তা প্রতিহত করতে হবে।

হাটহাজারীতে ভন্ড বাবার অাস্তানা গুড়িয়ে দিলেন ইউএনও@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@হাটহাজারীর পৌরসভার অাদর্শগ্রামে ইব্রাহিম চিশতী নামের এক ভন্ডের অাস্তানা গুড়িয়ে দিল হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল অামিন।রবিবার(২৮এপ্রিল) বিকালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় ভন্ডের অাস্তানাটি গুড়িয়ে দেয় মুহুর্তে।এসময় এলাকার কয়েকশত উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিলেন। কোন প্রকার বিশৃংখলা না ঘটতে অাইন শৃংখলা বাহীনিও উপস্থিত ছিলেন।এলাকাবাসীর একাধিক লোকের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৮বছর অাগে এই গ্রামের বাসিন্দা ইবরাহীম চিশতী(প্রকাশ অনিল বড়ুয়া) মারা যায়। তাকে স্থানীয় কবর স্থানে কবর না দিতে তিনি অচিয়ত করে যাওয়ায় তার স্বয়ন কক্ষে দাফন করে। তার জানাযার নামাজে মাত্র ৯জন ব্যক্তি অংশ গ্রহন করেন। বিগত ৬ বছর যাবৎ তার নামে রাত্রে নারী পুরুষ বাৎসরিক ওরশ অনুষ্ঠান করে ঘরোয়া ভাবে। সারারাত নাচ গানে অতিষ্ঠ পাশে বসবাসরত পরিবাগুলো। দীর্ঘ ৮ বছর অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করে অাসছে। লোক ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেনা তারা। অাগামী ৩মে প্রকাশ্যে ওরশ করার জন্য অদুদিয়া মাদরাসার শিক্ষক অাবদুল ওহাব অাল কাদেরীর নেতৃত্বে ওরশ উদযাপন করতে বিভিন্ন লিপলেট, পোষ্ঠার ও টাকা উত্তোলনের রশিদ বই নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে চাঁদা উঠাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে মডেল থানার ওসির কাছে অভিযোগ করলে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এলাকাবাসীর মাধম্যে বিষয়টি অবগত করলে সোমবার বিকেলে তিনি ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের পরিস্থিতি দেখে দ্রুত ভন্ড বাবার অাস্তানাটি গুড়িয়ে দেয়। তার ২মেয়ে ও ২ছেলে রয়েছে। পুত্র ২জনেই সিএনজি চালক। তারা নাকি অাস্তানার শাহজাদা দাবি করেন। প্রায় ৮ বছরের ভন্ডামীর অাস্তানাটটি গুড়িয়ে দেওয়ায় এলাকার থমথম পরিস্থিতি এখন শান্ত বললেই চলে। অদুদিয়া মাদরাসার শিক্ষক ও এলাকার বিতর্কিত ব্যক্তি মুফতি অাবদুল ওহাব অাল কাদেরীর কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটি কোন মাজার না। কোন পীরও না। তবে মনছুরাবাদ পীরের মুরিদ ছিলেন। তাই তার কবরকে দায়রাপাক হিসেবে তৈরী করা হলে অামি তার দায়িত্ব পালন করে অাসঠি তখন থেকে। এ ওরশের কার্যক্রমের সাথে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন অামি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবনা। কিন্তু এলাকার একাধীক ব্যক্তি অাবদুল ওহাবের বিরোদ্ধে নারী ঘটিত কেলেংকারির অভিযোগ করে বলেন, একজন নারী লোভী মৌলভী সমাজে ফেৎনার জন্য করতে নানা রকম বিতর্কিত কাজ সৃষ্টি করেন।এ বিষয়ে ইউএনও রুহুল অামিন প্রতিবেদককে জানান, এ এলাকায় ভন্ডামী করতে অলি অাওলিয়াদের বদনাম রটাতে ও মাজার বানিয়ে ধান্দা করতে মুলত তাদের এ পরিকল্পনা। কিন্তু এলাকার এত লোক থাকতে এ সব বিষয় অাহে থেকে কেন বন্ধ করা হলনা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন তখনি বন্ধ করলে অাজ এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতনা। তবে সুন্দর সমাজ গড়ে তুলতে এলাকাবাসী এ বস বিষয়ে জনতম সৃষ্টি করে তা পতিহত করতে হবে।

Posted by হাটহাজারীর খোলা কাগজ on Sunday, 28 April 2019

ad

পাঠকের মতামত