293527

এমডিকে ওয়াসার পানির শরবত খাওয়াতে হাজির জুরাইনবাসী

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ওয়াসার ‘সুপেয় পানি‘ দিয়ে শরবত খাওয়াতে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে হাজির হয়েছেন জুরাইন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের সঙ্গে রয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানি, চিনির প্যাকেট ও লেবু। এসব দিয়ে শরবত বানিয়ে এমডিকে খাওয়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ওয়াসার গেটে হাজির হলেও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওয়াসার পক্ষ থেকে কেউই তাদের সঙ্গে দেখা করেননি।

ওয়াসার পানি শতভাগ বিশুদ্ধ ও নিরাপদ-ওয়াসার এমডির করা এই মন্তব্যের পর এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বেশ কয়েকজন তরুণ। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে আছেন রাজধানীর জুরাইন এলাকার বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান। ওয়াসা ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এমন অভিনব কর্মসূচি পালন করতে দেখে ভীড় জমিয়েছে উৎসুক মানুষ।সাংবাদিকদের মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এলাকার ওয়াসার পানি ড্রেনের পানির মতো অপরিষ্কার। এটা তো খাওয়া দূরের কথা গন্ধে হাতে নেওয়াই যায় না। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কীভাবে বলেন ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ! তাই আমরা এই পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়াতে এসেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পূর্ব জুরাইনের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের এলাকার পানি খুবই খারাপ, দুর্গন্ধযুক্ত ও ড্রেনের পানির মতো। ২০১২ সালে আমরা জুরাইনের সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দা গণস্বাক্ষর নিয়ে ওয়াসার এমডি বরাবর একটি অভিযোগ করেছিলাম। সেই অভিযোগে কোনো কাজ হয়নি। এখনো প্রতিদিন ময়লা পানি আসে।’এদিকে যেকোন ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে ওয়াসা ভবন ঘিরে অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে গত বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত মাইডাস সেন্টারে ‘ঢাকা ওয়াসা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক একটি গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ করে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করে। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতিবছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়।’

তবে টিআইবি থেকে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। গত শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়। টিআইবি যে পদ্ধতিতে এ গবেষণা করেছে সেটি একপেশে ও উদ্দেশ্যমূলক। এটি পেশাদারি গবেষণা হয়নি। ৩৩২ কোটি টাকার অপচয়ের বিষয়ে টিআইবির গবেষণা অনুমান নির্ভর ও বাস্তবতা বিবর্জিত। ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানি উৎস থেকে গ্রাহকের জলাধার পর্যন্ত পানি সম্পূর্ণ শতভাগ বিশুদ্ধ ও নিরাপদ।’

ad

পাঠকের মতামত