292114

নুসরাত হত্যায় টাকা কে দিলো জানতে মাঠে সিআইডি

ফেনীর সোনাগাজীতে নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনা চাপা দিতে অর্থ লেনদেন হয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। এই হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কিংবা ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোনো অবৈধ লেনদেন হয়েছে কিনা কিংবা কে বা কারা এসব লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সেসব খুঁজে করতে কাজ শুরু করছে সিআইডি। শুক্রবার সকালে সিআইডির সিনিয়র সহকারী বিশেষ পুলিশ সুপার শারমিন জাহান বাংলাদেশ জার্নালকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শারমিন জাহান বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে অর্থের লেনদেন করা হয়েছে। সেই অভিযোগেরই তদন্ত করবে সিআইডি। সত্যিই যদি অর্থের লেনদেন হয় তাহলে অর্থ যোগানদাতাকে খুঁজে বের করা হবে।’

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তাকে যৌন নিপীড়ন করে বলে অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে নুসরাতের পরিবারতে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।

গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যায় নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। তাকে মামলা তুলে নেওয়া কথা বলে ভয় দেখানো হয়। পরে সেখানে বোরকা পরিহিত ৪/৫ ব্যক্তি নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত ১০ এপ্রিল তিনি মারা যান। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে নুসরাতকে দাফন করা হয়।

আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। তারা হলো– অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ ও হাফেজ আবদুল কাদের। এর মধ্যে চার জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।

ad

পাঠকের মতামত