292243

নুসরাত হত্যাকাণ্ড : আ.লীগ নেতা রুহুল আমিন আটক

সোনাগাজী প্রতিনিধিঃ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পৌরসভার তাকিয়া রোড এলাকার নিজ বাসভবন থেকে তাকে আটক করে পিবিআই সদস্যরা। সংস্থাটির চট্টগ্রাম রেঞ্জের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মোহাম্মদ ইকবাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, পিবিআইয়ের সদস্যদল একটি মাইক্রোবাসে রুহুল আমিনকে তুলে নিয়ে যান। এখন তিনি পিবিআই কার্যালয়ে আছেন। মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘রুহুল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য এনেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

এদিকে রুহুলের চাচাতো ভাই লিটন মেম্বার দৈনেক আমাদের সময়কে জানান, বিকেল ৫টার দিকে তার ভাইকে পিবিআই সদস্যরা একটি মাইক্রোবাসে করে বাসা থেকে নিয়ে গেছে। তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তারা বলেছেন, তাদের ‘স্যার’ রুহুল আমিনের সঙ্গে কথা বলতে চান। নুসরাত হত্যার ঘটনায় একাধিক আসামির জবানবন্দিতে তার নাম এসেছে। তাই তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে মামলার অন্যতম দুই আসামি নুরুদ্দিন এবং শাহাদত হোসেন শামীম আদালতে উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সভাপতির নাম উল্লেখ করেন।

শাহাদাত তার জবানবন্দিতে জানান, নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর তিনি দৌঁড়ে নিচে নেমে উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে বের হয়ে যান। এর মিনিট খানেকের মধ্যে তিনি রুহুল আমিনকে ফোনে নুসরাতকে আগুন দেওয়ার বিষয়টি জানান। তখন রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি জানি। তোমরা চলে যাও।’

নুসরাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ্দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের। আজ আটক করা হলো আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনকে।

নিহত নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে তিনি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।

৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এই ঘটনায় নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।

ad

পাঠকের মতামত