
সন্ত্রাসী মামুনকে পদ দিলেন বিএনপি নেতা
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তিনি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মফিজুর রহমান মামুনের মতো একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীকে পল্লবী থানাধীন ৯১-নং ওয়ার্ডের সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহসান উল্লাহ হাসান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৬ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। ওই সময় মামুনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেন হাসান এবং মামুনকে প্রতিশ্রুতি দেন নির্বাচনের পরেই ৯১-নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি করা হবে তাকে। সেই প্রতিশ্রুতিতেই তিনি মামুনকে ৯১-নং ওয়ার্ডের বিএনপি সভাপতি করেছেন বলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে পল্লবীর দ-ব্লকের সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী মামুনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেন আহসান উল্লাহ হাসান এবং মামুনকে প্রতিশ্রুতি দেন নির্বাচনের পরেই ৯১-নং ওয়ার্ডের বিএনপি সভাপতি করা হবে তাকে। আহসান উল্লাহ হাসান তাই করেছেন। দলের কারো সঙ্গে আলোচনা না করে ক্ষমতা বলে ৯১- নং ওয়ার্ডের বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে আবু হেনা মোস্তাফিজুর রহমান শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে মামুনকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পল্লবী বিএনপির কয়েকজন নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, পল্লবী এলাকার জনগণ মনে করে সন্ত্রাসী মামুনকে বিএনপির মতো দলের দায়িত্ব সঠিক হয়নি। কারণ মফিজুর রহমান মামুনের ১ ৮ থেকে ২ ০ বছর ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। তিনি একজন পলাতক আসামী। আর যে ব্যক্তি বিএনপির আমলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে দেশে আসতে পারেনি, সেই ব্যক্তিকে কিভাবে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হলো? তাই আমাদের দাবি, মামুনকে বাদ দিয়ে পূর্বের কমিটি বহাল রাখা হোক।
কে এই মফিজুর রহমান মামুন? জানা গেছে, মফিজুর রহমান মামুন ১৮ থেকে ২০ বছর ভারতে অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে পল্লবী ও মোহাম্মদপুর থানায় ১৭টি হত্যা মামলা এবং ২৭টি অস্ত্র মামলাসহ চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। এসব মামলায় সাজাও হয়েছে মামুনের। এছাড়া মামুন ভারতে গ্রেপ্তার হয়ে সাজাও খেটেছেন কয়েকবার।
তবে গত ১৫ এপ্রিল একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, জরুরি সভায় পল্লবী থানার আওতাধীন ৯১-নং ওয়ার্ডের সভাপতি আবু হেনা মোস্তাফিজুর রহমান দলীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা না থাকার কারণে উক্ত পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আর দলের কর্মকাণ্ড বেগবান করার জন্য মো. মফিজুর রহমান মামুনকে সভাপতির দায়িত্ব প্রদান করা হলো। এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন পল্পবী থানার সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম মন্টু। তবে অভিযোগ রয়েছে, আহসান উল্লাহ হাসান পল্পবী থানার সভাপতি সাজ্জাদ হোসেনকে জোড় করে এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করান।
জানতে চাইলে পল্পবী থানার সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আবু হেনা মোস্তাফিজুর রহমান দলীয় কর্মকান্ডে না পাওয়ায় সভাপতির পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং মফিজুর রহমান মামুনকে সভাপতি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার খবর আমি জানি না। তাকেও দলের কর্মকান্ডে পাওয়া না গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে মফিজুর রহমান মামুন ভারতে অবস্থান করছেন- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি জানি তিনি ঢাকায় আছেন।
পল্পবী থানার সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ মল্লিক বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, পল্লবী থানার কোন ওয়ার্ডের কোন সভা হয়নি। আমি সব সময়ে দলের সঙ্গে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। নেতাকর্মীর জামিনসহ সব রকমের যোগাযোগ রাখছি। তারপরেও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাকে দিল, আমি জানি না। আমার কাছে কোন চিঠিও আসে নাই। মফিজুর রহমান মামুনকে সভাপতি করা হয়েছে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এবিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।