291493

‘শবে বরাতে হালুয়া-রুটি বানালে আরশের নিচে ছায়া পাবে’- ভিত্তিহীন কথা

ইসলাম ডেস্ক।। গ্রামের মহিলাদের প্রায় সকলকেই বলতে শোনা যায়, ‘শবে বরাতে হালুয়া-রুটি বানালে আরশের নিচে ছায়া পাওয়া যাবে।’ এটিকে রাসূলের হাদীস হিসেবেই বলা হয়েছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসের সাথে এর দূরতম সম্পর্কও নেই। এটি এমন একটি ভিত্তিহীন কথা যার জাল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এমনকি জাল হাদীসের ওপর লেখা কিতাবাদিতেও এর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না।

কাউকে কাউকে বলতে শোনা যায়, উহুদ যুদ্ধে যখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাঁত মোবারক শহীদ হয়েছিল, তখন কিছুদিন কোনো প্রকার শক্ত খাবার খেতে পারতেন না। সেই ঘটনার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এই দিনে ঘটা করে হালুয়া রুটি খাওয়া হয়। কিন্তু ওহুদ যুদ্ধ তো শাবান মাসের ১৫ তারিখে হয়নি তা হয়েছে শাওয়ালের ৭ তারিখে। সুতরাং যদি সে কেন্দ্রীক কোনো বিষয় থাকতো তাহলে তা শাওয়াল মাসের ৭ তারিখে থাকতো; শাবানের ১৫ তারিখে নয়।

শাবানের পনের তারিখ রাতের ফজিলত সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতীত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ৫৬৬৫; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৩৮৩৩) কিন্তু এই রাতের সাথে হালুয়া-রুটির কী সম্পর্ক?

এ রাতের যতটুকু ফজিলত প্রমাণিত আছে শুধু ততোটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। রুসুম-রেওয়াজের পিছে পড়ে এর মূল ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া ঠিক নয়। আর আলোচ্য বিষয়টি মূলত এই রাতের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন রুসুমের অন্যতম, যার কোনো ভিত্তি নেই। এ ধরণের কাজ এবং এ রাতকেন্দ্রিক আরো যত রুসুম-রেওয়াজ আছে এগুলো থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। আর এ ধরনের ভিত্তিহীন কথাকে রাসূলের হাদীস হিসেবে বলা অনেক মারাত্মক গুনাহের কাজ। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। দ্বীনের সকল বিষয়ে সহীহ কথা ও সহীহ কাজ করার তাওফিক দিন।

ad

পাঠকের মতামত