291445

ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মদ খাইয়ে ‘গণধর্ষণ’,ইউপি সদস্য বিচারের নামে রেখে দেন সাদা কাগজে সই

নিউজ ডেস্ক।। বান্দরবানের লামা উপজেলায় মদ খাইয়ে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে (২২) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের এক তামাকখেতে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্য ও তার ছেলে মারধর করেন। শুধু তাই নয়, তিনজন ইউপি সদস্য বাজারে প্রকাশ্যে বিচার বসান। এরপর সাদা কাগজে সই নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নূর হোসেন নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার নারী ও তার মা এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় ওই নারী ছয় বছর বয়সী এক ছেলেসন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন।

ওই নারী অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বদুঝিরি এলাকার নূর হোসেন, বড় ছনখোলা এলাকার নূর মোহাম্মদ ও কুমারী এলাকার মো. রুবেল জোর করে মদ খাইয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। বিকেল পাঁচটার স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করেন। কিন্তু ওই নারী ‍ঘটনাস্থল থেকে আসার সময় ইউপি সদস্য মো. কামাল উদ্দিন ও তার ছেলে কাফি উদ্দিন তাকে মারধর করেন। এমনকি তাকে বাজারে নিয়ে প্রকাশ্যে বিচার বসান ইউপি সদস্য মো. সহিদুজ্জামান, কামাল উদ্দিন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য আনাই মারমা।

ওই নারী বলেন, ‘তারা আমার কাছ থেকে কোনো অভিযোগ না শুনে সাদা কাগজে টিপসই নিয়ে বলেন, যা হয়েছে এখানেই শেষ। কোনো অভিযোগ করবে না। তারা নূর হোসেন, নূর মোহাম্মদ ও রুবেলকে বাড়ি চলে যেতে বলেন।’ তবে ইউপি সদস্য মো. কামাল উদ্দিন ধর্ষণের শিকার নারীকে মারধরের কথা অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি মারধর করিনি। এলাকাবাসী তাদের ঘিরে রেখেছিল বলে আমি মেয়েটিকেসহ তিনজন পুরুষকে বাজারে নিয়ে আসি। মেয়েটিকে তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা তিনজন ইউপি সদস্য সাদা কাগজে মেয়েটির টিপসই নিয়ে নিই।

কামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘মেয়েটির সই নেওয়ার আগে সিদ্ধান্ত হয়, এ ঘটনায় পরবর্তী সময়ে কোনো সমস্যা হলে আমরা নূর হোসেন, নূর মোহাম্মদ ও রুবেলকে প্রশাসনের হাতে তুলে দেব। এরপর ওই মেয়ে এবং তার মা বাড়ি চলে যায়।’ বিচার বসানোর ঘটনায় যুক্ত আরেক ইউপি সদস্য সহিদুজ্জামানও একই কথা বলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ওই নারীকে উদ্ধারের সময় তার পোশাক এলোমেলো ছিল, নেশাগ্রস্ত ছিলেন। এ ঘটনায় এলাকার প্রভাবশালী লোকজন জড়িত বলেও জানান তারা। লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপ্পেলা রাজা নাহা বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ করা নারী এখন থানায় পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল রাতে নূর হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।’ উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।

ad

পাঠকের মতামত