289444

যা করবেন ডায়াবেটিস রোগ হয়েছে জানতে পারলে?

স্বাস্থ্য ডেস্ক।। ডায়াবেটিস রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে দীর্ঘদিন সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব বলে চিকিৎসকরা বলছেন। বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ বলে বলছে ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশন। কিন্তু যারা আক্রান্ত তাদের ৫৭ শতাংশই জানেন না যে তাদের ডায়াবেটিস রয়েছে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের নানা উপায় শেখানোর মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আজ একটি `ডায়াবেটিস মেলা` আয়োজন করেছে একটি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান কংগ্রেসিয়া।

মেলার কার্যকরী পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ডা মোঃ. ফজলে রাব্বী খান বলছেন, ডায়াবেটিস একবার আক্রান্ত হলে তা চিকিৎসায় পুরোপুরি নিরাময় করা যায় না। এটি তেমন রোগ নয়। কিন্তু সেটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আর নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায়। আক্রান্ত হয়েছেন সেটা জানতে পারলে কি করবেন? সেজন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ডা মোঃ. ফজলে রাব্বী খান।

খাদ্য সম্পর্কে সচেতনতা : কতটুকু খাদ্য গ্রহণ নিরাপদ আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেটি বুঝতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য আলাদা খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে সেগুলো সুষম হতে হবে। খাওয়ার পরিমাণটা বাংলাদেশের মানুষজন বুঝে উঠতে পারে না। সেটি বাংলাদেশের মানুষের চর্চার মধ্যে নেই বলে উল্লেখ করছিলেন ডাঃ খান। ডায়াবেটিস রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে দীর্ঘদিন সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব বলে চিকিৎসকরা বলছেন।

কায়িক পরিশ্রম করতে হবে : শুধু খেলেন আর বসে থাকলেন সেটি হলে কিন্তু চলবে না। অবশ্যই শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। সেটা যেকোনো ধরনের কায়িক পরিশ্রম হতে পারে। দিনে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট অবশ্যই কোন ধরনের কায়িক পরিশ্রম করা উচিত। সবচেয়ে সহজ হল হাঁটতে পারা। রিফাইন করা চিনি এড়িয়ে চলতে হবে।

মিষ্টিও খেতে পারবেন : সাধারণের একটি ধারণা হল ডায়াবেটিস হলে মিষ্টি খাওয়া যাবে না। এই ধারণাটি ভুল বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তবে অবশ্যই পরিমিত হতে হবে। এক বসায় এক কেজি খেয়ে ফেললেই হবে না। আর মনে রাখতে হবে মিষ্টিতে গ্লুকোজ আছে। ভাতেও কিন্তু সেটি আছে। অন্য আরও অনেক খাবারেও রয়েছে। তবে মিষ্টিতে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি সেটিই হল সমস্যা। মিষ্টি খাওয়া যাবে কিন্তু অল্প পরিমাণে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে তবেই খাওয়া ঠিক হবে।

জীবনাচরণ পরিবর্তন : কি খাচ্ছেন আর কতটা পরিশ্রম করছেন সব কিছু জীবনাচরণের অংশ। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত কতটুকু কাজ করা দরকার, কীধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, কতটুকু খেতে হবে, কয় বার খেতে হবে, কার জন্য কতটুকু খাবার দরকার ইত্যাদি সবই এর অংশ। শরীরের ওজন কমিয়ে রাখতে হবে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

ঔষধের ব্যবহার : উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে চলার পরও যদি রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের দেয়া এবং তার নির্দেশিত ঔষধ সেবন করতে হবে।

বংশগত কারণ : ধরুন আপনার বংশে আগে কারো ডায়াবেটিস ছিল। বংশগত কারণে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকে। কিন্তু তার মানে অন্য কারো হবে না সেটি ভাবার কোন কারণ নেই।

ডায়াবেটিসের কারণে অন্য রোগ : ডায়াবেটিস হলে কিডনি রোগ, চোখের রোগ, হার্টের সমস্যা ও মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না করলে এসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। হৃদযন্ত্রের বড় সমস্যা বা অন্ধত্ব পর্যন্ত গড়াতে পারে।

তথ্য জেনে নেয়া : ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি খুব সহজ বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। তথ্যও খুব সহজেই পাওয়া যায়। সেগুলো জেনে নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কারণ তথ্য জানা থাকলে অনেক কিছুই সহজ মনে হয়। উৎস -বিবিসি

ad

পাঠকের মতামত