288922

‘দুই জনের ইচ্ছায় কিছু হলে সেটা ধর্ষণ হয় নাকি?’

সাভার প্রতিনিধিঃ ‘দুই জনের ইচ্ছায় কিছু হলে সেটা ধর্ষণ হয় নাকি’- এমন কথা বলে ধর্ষণের ঘটনাকে অস্বীকার করেছে ধর্ষক সজিবের পরিবার। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের এমন ঘটনা ঘটেছে সাভারে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরও পুলিশ ধর্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় অপমানে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ভুক্তভোগী ওই তরুণী।
বুধবার বিকেলে সাভার পৌর এলাকার ইমান্দিপুর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী অভিযোগ করেন, স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রতিবেশী আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে সজিব হোসেনের (২১) সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। টানা দুই বছর তাদের মধ্যে এ সম্পর্ক চলার এক পর্যায়ে গত জানুয়ারি মাসে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে সজিব। এ ঘটনার পর বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সজিব বিভিন্ন সময়ে ওই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে।

সর্বশেষ বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে একটি সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিয়ের দিনও ধার্য করা হয়। কিন্তু তারিখ দিয়েও বিয়ে না করে ছেলেকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়ে ঘটনার জন্য মেয়েকে অভিযুক্ত করে উল্টো থানায় অভিযোগ দায়ের করে ছেলে পক্ষ। এ ঘটনায় ধর্ষণের বিষয় উল্লেখ করে মঙ্গলবার রাতে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ওই তরুণী।

অভিযোগ দায়ের পর এর তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রুবেল হোসেন একাধিকবার সময় দিয়েও ঘটনার তদন্ত করতে না যায়নি। এ ঘটনায় অপমানে ভুক্তভোগী ওই তরুণী বুধবার বিকেলে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীরা ঘরের দরজা ভেঙে ওই তরুণীকে উদ্ধার করেন।

এ দিকে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে মুহূর্তের মধ্যেই স্থানীয়রা ভুক্তভোগীর বাড়িতে ভিড় জমায়। খবর পেয়ে মানবাধিকার কর্মী এবং সংবাদ কর্মীরাও ঘটনাস্থলে যায়। পরে ঘটনাস্থলে আসেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রুবেল হোসেন। অভিযোগের বিষয়ে ছেলের নানা মো. আকবর আলী জানান, আমার নাতির সাথে মেয়েটির সম্পর্ক ছিলো। সেই সুবাদে মেয়টি আমাদের বাসায় যাতায়াত করতো। তবে তাদের মধ্যে কোন শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে কিনা সেটা আমরা জানিনা।

তবে ছেলের মা, বোন এবং অন্যান্য আত্মীয়রা প্রশ্ন তুলেন, ছেলেতো জোর করে মেয়েকে কিছু করে নাই। দুই জনের ইচ্ছায় যদি কোন কিছু হয়ে থাকে সেটা কি ধর্ষণ হয় নাকি? এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রুবেল হোসেন বলেন, ধর্ষণের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে মীমাংসার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যথায় মামলা দায়ের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সূত্র: দেশ রুপান্তর

ad

পাঠকের মতামত