287571

টেলি সামাদের নামের আগে যেভাবে ‘টেলি’ যুক্ত হয়

বিনোদন ডেস্কঃ না ফেরার দেশে চলে গেছেন কিংবদন্তি অভিনেতা টেলি সামাদ। বাংলা চলচ্চিত্রে তার মতো কৌতুক অভিনেতা আর পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান চলচ্চিত্র বোদ্ধারা। তবে সবাই গুণী অভিনেতাকে টেলি সামাদ নামে চিনলেও তার মূল নাম আবদুস সামাদ। তাহলে নামের আগে কিভাবে যুক্ত হলো ‘টেলি’ শব্দটি? এর পেছনে রয়েছে মজার একটি গল্প। গল্পটা স্বাধীনতার পরের। টেলি সামাদ তখন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। টিভিতে তার কৌতুক দেখে মুগ্ধ হয় মানুষ।

অভিনীত চলচ্চিত্র মানেই হিট। একদিন তিনি উপস্থিত হন বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে। মোস্তফা মামুন ছিলেন বিটিভির ক্যামেরাম্যান। তিনি ডাকলেন তখনকার আব্দুস সামাদকে। বললেন, ‘সামাদ শুন, আজ থেকে তোর নাম টেলি সামাদ।’ পরে একটি অনুষ্ঠানে টেলি সামাদ জানিয়েছিলেন, ‘সেই দিনের পর থেকেই আমি আবদুস সামাদ থেকে হয়ে গেলাম টেলি সামাদ।’ মূলত টেলিভিশনে তার জনপ্রিয়তার বিষয়টি বিচার করেই মোস্তফা মামুন তাকে টেলি উপাধি দেন। এরপর থেকে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টেলি সামাদ নামেই পরিচিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন ৭৪ বছর বয়সী টেলি সামাদ। বেশ কয়েকবার হাসপাতালেও ভর্তি হন। গত ডিসেম্বরে টেলি সামাদের শরীরে ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৪ এপ্রিল স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। কামাল পাশার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। এ অভিনেতাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে। স্ত্রী নিগার সুলতানা, দুই মেয়ে সোহেলা ও সায়মা এবং এক ছেলে সুমনকে রেখে গেছেন টেলি সামাদ।

১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের নয়াগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন টেলি সামাদ। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা তার বড়ভাই বিখ্যাত চারুশিল্পী আব্দুল হাইয়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। সংগীতেও রয়েছে এই গুণী অভিনেতার পারদর্শিতা। ‘মনা পাগলা’ ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি। টেলি সামাদ ১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। চার দশকে প্রায় ৬০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ২০১৫ সালে তার অভিনীত সর্বশেষ ছবি মুক্তি পায় ‘জিরো ডিগ্রী’।

উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে সুজন সখি, মায়ের চোখ, মন বসে না পড়ার টেবিলে, কাজের মানুষ, মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, মিস লোলিতা, নতুন বউ, মাটির ঘর, নাগরদোলা, গোলাপী এখন ট্রেনে, অশিক্ষিত, গুন্ডা, চাষীর মেয়ে, রঙিন রূপবান ও ভাত দে।

ad

পাঠকের মতামত