286928

প্রকাশ্যে নকল: পরীক্ষার্থী প্রতি ২ হাজার টাকা নিলেন শিক্ষক

বরিশাল প্রতিনিধিঃ বরিশালের ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন আইন কলেজগুলোর এলএলবি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। এই পরীক্ষা কেন্দ্রের ‘সিক বেড’ বা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কক্ষ রাখা হয়েছে। তবে ৩৬ জন ধারণ ক্ষমতার কক্ষটিতে পরীক্ষা দিচ্ছেন ৬০ জন। কক্ষটির প্রায় সব শিক্ষার্থীই নকল করে বা বই খুলে পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সদস্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ায় তাদের কিছু বলতে পারছেন না পরিদর্শকরা। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যেও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নিয়ম অনুযায়ী ‘সিক বেড’ অসুস্থ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার কথা। তবে এবার পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের কেউই অসুস্থ নন। অভিযোগ রয়েছে, কলেজের কতিপয় শিক্ষক পরীক্ষার্থী প্রতি দুই হাজার টাকা করে নিয়ে ওই বিশেষ কক্ষে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রশাসনের লোক হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে তারা এ কক্ষে উন্মুক্তভাবে নকল করে পরীক্ষা দিচ্ছেন। কথিত অসুস্থদের বেপরোয়া আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে পরিদর্শকরা কক্ষ ত্যাগ করছেন। প্রতি শুক্রবার অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় এসব ঘটনা ঘটছে। আজও একই ঘটনা ঘটে।

বিএম কলেজ সূত্র জানায়, কলেজের ২০৪ নম্বর কক্ষটি ‘সিক বেড’ হিসেবে নির্ধারিত। সেখানে ৩৬টি সিট থাকলেও পরীক্ষা দিচ্ছেন ৬০ জন। তাদের মধ্যে আছেন ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের, রেজভি, অপু, জসিম উদ্দিন, তাজুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, মাইনুল হোসেন, ওয়ালিউল ইসলামসহ ক্ষমতাসীন দলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী। সব শিক্ষার্থী বই দেখে লেখায় কক্ষ পরিদর্শক প্রভাষক মোজাম্মেল হোসেন শুক্রবার দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানিয়ে কক্ষ ত্যাগ করেন। আগের শুক্রবার শেরেবাংলা কলেজের এক শিক্ষক নাজেহাল হয়ে চলে যান।

অসুস্থদের কক্ষে পরীক্ষায় উন্মুক্ত নকলের কথা স্বীকার করে কেন্দ্রের আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, সেখানকার পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমি কমিটি থেকে অব্যাহতি নেব। ওমর ফারুক আরৈঅ বলেন, একটি কক্ষে ৬০ জন শিক্ষার্থী দেখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিল্যান্স টিম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। আমি তাদের বলেছিলাম বহিস্কার করতে। কেউ বহিস্কার করার সাহস পায়নি। আমরা চাই না বিএম কলেজে ল কেন্দ্র থাকুক।

বিএম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, এ কলেজে কেন্দ্র না দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে বলেছিলাম। তারপরও কেন্দ্র চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতি শুক্রবার যেভাবে পরীক্ষা হচ্ছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। জেলা প্রশাসনের টিমের অনুপস্থিতি ও মাত্র ২ জন পুলিশ দায়িত্বে থাকায় পরীক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অধ্যক্ষ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সার্বিক পরিস্থিতি জানানো হয়েছে। এমনটা হলে আমরা আগামীতে পরীক্ষা নিতে পারব না। সূত্রঃ সমকাল, বাংলাদেশ জার্নাল

ad

পাঠকের মতামত