তিন দিনের রিমান্ডে সেই ‘সু-প্রভাত’ বাসের মালিক গোপাল
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার চৌধুরীকে প্রগতি সরণিতে বাসচাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার সু-প্রভাত পরিবহনের মালিক ননী গোপাল সরকারের (৪২) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।শুক্রবার বিকালে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক বাকী বিল্লাহ এই আদেশ দেন। দুপুরের পর ননী গোপালকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তের স্বার্থে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম। এরপর শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।অন্যদিকে গোপালের আইনজীবী ইয়ার খান রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, এ মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা আসামির বিরুদ্ধে যায় না। এ গাড়ির ড্রাইভার-হেলপার রিমান্ডে আছে। কিন্তু মালিক তো আর গাড়ি চালায়নি। তাহলে কেন রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর প্রত্যেক মালিক তো বলবেই যে নিরাপদ স্থানে গাড়ি সরিয়ে নেয়ার কথা। এটি তো অপরাধের কিছু নেই। রিমান্ড চাওয়ার কোনো যুক্তিগত কারণ নেই। আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধরণ নিবন্ধন কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ২৭ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত ঘাতক বাসের কনডাক্টর ইয়াসিন আরাফাত ও হেলপার ইব্রাহিমকে সাত দিনের রিমান্ড পাঠান। পরে ২ এপ্রিল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা। এরপর আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এছাড়াও ২০ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত বাসচালক সিরাজুল ইসলামকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠান। এরপর ২৮ মার্চ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সিরাজুল। এরপর তাকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
প্রসঙ্গত, বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার চৌধুরীকে চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় সু-প্রভাত পরিবহনের ঘাতক বাসটির (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৪১৩৫) মালিক ননী গোপাল সরকারকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পরে মুগদার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আবরার চৌধুরীকে চাপা দেয়ার আগে আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল সু-প্রভাত পরিবহনের বাসটি। গুলশানের শাহজাদপুর বাঁশতলা এলাকায় সিনথিয়া নামের এক কলেজছাত্রীকে ধাক্কা দেয়ার পর চালক সিরাজুলকে আটক করে ট্রাফিক পুলিশের হাতে তুলে দেন যাত্রীরা। এরপর কনডাক্টর ইয়াসিন আরাফাতকে বাসটি নিয়ে সরে পড়ার পরামর্শ দেন মালিক ননী গোপাল সরকার।পালানোর সময় আবরারকে চাপা দেয় বাসটি। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হলে আত্মগোপন করেন ননী গোপাল সরকার।