285599

‘সাহস তো কম নয়, এখনও হলে থাকিস’ বলেই ছাত্রলীগের মারধর!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এসএম হল সংসদের এক প্রার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র মো. ফরিদ হাসানকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন ফরিদ হাসান।

মারধরের বিষয়ে ফরিদ বলেন, ‘আমি রাত ১১টার দিকে রুমে ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন লাঠি-সোটাসহ এসে আমাকে ডেকে নিয়ে ডাইনিং রুমে যায়। সেখানে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, সাবেক নেতা মিজানুর রহমান পিকুলসহ হল কমিটির প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “তোর সাহস তো কম নয়, এখনও হলে থাকিস”-এই বলে আমাকে ব্যাপক মারধর শুরু করে। সেখান থেকে মারতে মারতে হল গেটে নিয়ে গিয়ে বেরিয়ে যেতে বলে।’

ওই শিক্ষার্থী জানান, এ সময় তাকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যেতেও সাহস করেনি। পরে তিনি একাই হাসপাতালে যান। মারধরের শিকার মো. ফরিদ হাসান আরও জানান, হল সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা তাকে শাসিয়ে ও হুমকি-ধামকি দিয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে বলেছিল। একপর্যায়ে তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন বলে জানান।

এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল বলেন, ‘তাকে (ফরিদ হাসান) মারধরের সাথে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা যতদূর জানি, তার রুমে মাদক পাওয়া গিয়েছিল এবং হলের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য হল প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল। পরে হল প্রশাসন তার রুমটি সিলগালা করে দেয়। সে এখন হলে থাকে না। কালকে হলে আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করেছে বলে আমরা শুনেছি।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে অমানবিকভাবে মারা হয়েছে। এমনকি হলের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থেকে তাকে মারধর করেছে। তাকে হাসপাতালে নিতেও কেউ সাহস করেনি।’ ভিপি নুর আরও বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, হলে অছাত্র যারা থাকে তারাই নিয়মিত ছাত্রদের নির্যাতন করে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তার ন্যায়বিচার প্রাপ্তির জন্য আমাদের যা করা লাগে তাই করব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার বলেন, ‘ফরিদের বিরুদ্ধে আগে কিছু অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই করতে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সূত্র: দৈনিক আমাদের সময়

ad

পাঠকের মতামত