284368

জাবিতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে তিন ছাত্রলীগকর্মী আটক

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষকের গাড়ি চালকের জামাতাকে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রলীগকর্মীকে আটক করেছে ভুক্তভোগীর স্বজন ও পরিবহন চালকরা। এ সময় আরও দুই ছিনাতাইকারী পালিয়ে যান বলে জানান তারা। পরে আটককৃতদের প্রক্টর অফিসে হস্তান্তর করা হয়। আজ শনিবার ভোর ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ছিনতাই ও মারধরের শিকার মনির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলমের গাড়িচালক আলমগীর হোসেনের জামাতা।

আটককৃতরা হলেন, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের মো. আল রাজি সরকার, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের সঞ্জয় ও ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের রায়হান পাটোয়ারী। পালিয়ে যাওয়া দুজন হলেন, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শাহ মুসতাক সৈকত ও দর্শন বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের মোর্কারম শিবলু। তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী বলে নিজেদের পরিচয় দেয়। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সঞ্জয় ঘোষ, রায়হান পাটোয়ারী ও আল রাজী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানার অনুসারী। মোর্কারম শিবলু ও শাহ মুসতাক সৈকত শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের অনুসারী।

জানা যায়, ছিনতাইয়ের শিকার মনির হোসেন ভোরে তার কর্মস্থাল ঢাকায় যাওয়ার জন্য বের হন। এ সময় ক্যাম্পাসের বিশমাইল এলাকায় ওই শিক্ষার্থীরা তাকে ধরে মাদক ব্যবসায়ী অভিহিত করে সব ছিনিয়ে নেন। এরপর ইজিবাইকে করে তাকে বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে মারধর করে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে আখ্যা দেয় এবং এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মনির হোসেন মোবাইল ফোনে তার স্ত্রীকে আটকের খবর ও মুক্তিপণের বিষয় জানালে পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে বের হন। পরে ইজিবাইক চালকের তথ্য মতে বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় যান তারা। এ সময় ওই শিক্ষার্থীরা তাদের আক্রমণ করতে আসেন। পরে উপস্থিাতি বেশি দেখে সৈকত ও শিবলু পালিয়ে যান। এ সময় বাকি তিনজনকে আটক করে এবং মনির হোসেনকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে জাবি মেডিকেল হয়ে সাভারের এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।

মারধরের কথা স্বীকার করে ওই শিক্ষার্থীরা জানান, মনির হোসেনকে দেখে তাদের সন্দেহনজনক মনে হয়েছিল। তাই কাছে গিয়ে তার বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন ওই শিক্ষার্থীরা। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মনিরকে মারধর করেন তারা। কিন্তু কোনো ছিনতাই বা মুক্তিপণ দাবি করিনি। এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমরা অভিযুক্তদের লিখিত বক্তব্য নিয়েছি। অভিযোগকারীদের মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তাদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ডিসিপ্লিনারী বোর্ডের বৈঠকের মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’ আটককৃতদের মধ্যে রায়হান পাটোয়ারীকে গত ৩১ অক্টোবর ছিনতাইয়ের অভিযোগে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার এবং ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, যা এখনও বহাল আছে।

ad

পাঠকের মতামত