280253

বাসাভাড়ার বদলে নারীদের শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব!

যৌনতার বিনিময়ে বিনামূল্যে বাসাভাড়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন যুক্তরাজ্যের বাড়ির মালিকরা। গত পাঁচ বছরে তাদের নিশানার শিকার হয়েছেন আড়াই লাখের বেশি নারী। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিররের তদন্তে উঠে এসেছে এমন ভয়াবহ তথ্য।প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পুরুষ বাড়ির মালিকরা সম্ভাব্য ভাড়াটিয়াদের ইমেইল পাঠাচ্ছেন এবং সেখানে স্পষ্টভাবে যৌনতার বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে।

অনলাইনে ‘যৌনতার বিনিময়ে বিনামূল্যে বাসাভাড়া’ এমন অগণিত বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে। এমনই এক বিজ্ঞাপনের তদন্ত করতে নামেন মিররের এক নারী সাংবাদকর্মী। তিনি যুক্তরাজ্যের একাধিক বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলেছেন এ বিষয়ে। বাড়ির মালিকরা এ বিষয়ে অবগত ছিলেন না যে, তিনি যে ভাড়াটিয়াকে এসব বার্তা পাঠাচ্ছেন তিনি আসলে নারী সংবাদকর্মী ছিলেন।এক ভুক্তভোগী জানান, প্রতিদিনই প্রতিরোধক ব্যতীত শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করতেন বাড়ির মালিকরা। বাকি প্রস্তাবগুলো প্রতিবেদনে লেখা সম্ভব নয়।

শুরুতে একাধিক সাক্ষাৎকারে ওই নারী সংবাদকর্মীকে বাড়ির মালিকরা শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। এমনকি তাদের মধ্যে কে কোন ধরনের পজিশনে মিলনে পছন্দ করেন তাও খোলামেলা আলোচনা করেন তারা।অনেক বাড়ির মালিক বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিশানা করেন যারা নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচ যোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে।কলিন লাক যুক্তরাজ্যের গ্রেভজেন্ডের বাসিন্দা নিজেকে ‘পেশাদার’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিজ্ঞাপনভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রেগলিস্টে। সেখানে তিনি ‘বিনামূল্যে বাসস্থান এবং আর্থিক সহায়তা’ নামে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। বিজ্ঞাপনে তিনি খোলামেলাভাবেই ‘যৌনতা এবং সম্পর্ক’ এর কথা বলেছেন।

একই সঙ্গে নারী ভাড়াটিয়াদের উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, তার সঙ্গে এক সপ্তাহে কয়েকবার সাক্ষাৎ করতে হবে এবং ‘ট্যানট্রিক’ সেক্স চেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।লাক ওই নারী সংবাদকর্মীকে বলেন, ‘আমি সর্বদা তোমাকে সম্মান করবো, কখনো তোমাকে কষ্ট দিবো না। আমি ‘ট্যানট্রিক’ সেক্স পছন্দ করি এবং এইটা করার চেষ্টা করবো। ’গত জানুয়ারিতে দেশটির ক্রাউন প্রসেকিউশন সার্ভিস (সিপিএস) এর যৌন অপরাধ আইন ২০০৩ মোতাবেক অবৈধ যৌনতার দায়ে সাত বছরের সাজার বিধান রাখা হয়েছে।হোভ শহরের লেবর এমপি পিটার কাইলি এ ধরনের বাড়ির মালিকদের ‘ধান্দাবাজ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। দেশের প্রচলিত আইনে এ ধরনের বাড়ির মালিকদের দমিয়ে রাখা সম্ভব নয় বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এখন আইন যেভাবে দণ্ডায়মান আছে, আপনি যদি যৌনতা বিনিময়ে বাসস্থানের নির্যাতনের শিকার হন তাহলে আপনার সকলের বিশ্বাস পেতে হলে যেভাবেই হোক প্রমাণ করতে হবে যে, আপনি পতিতা হয়েছেন।’এদিকে যখন সংবাদকর্মী নিজের আসল পরিচয় বাড়ির মালিকদের কাছে তুলে ধরেন তখন তারা নিজেদের জায়গা থেকে সরে দাঁড়ান এবং যৌনতা অবৈধ বলে দাবি করতে থাকেন।তাদের মধ্যে একজন বলেন, কিছুই ঘটেনি তাহলে কেন তা অবৈধ? এ নিয়ে প্রচুর পরিমাণে বিজ্ঞাপন আছেন বাজারে। এইটা আসলে মানুষকে সাহায্য করার একটা পদ্ধতি ছিলো। দয়ার বিপরীতে দয়া।’

অপরজন দাবি করেন, এ ধরণের লেনদেনগুলো অবৈধ তা তিনি জানতেন না এবং সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার এ বিষয়ে আপনাকে বলার কিছু নেই।’লাক তার মন্তব্য পরে অস্বীকার করেছেন এবং ওয়েবসাইট ক্রেইগলিস্টের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আর ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।এদিকে দেশটির বিচারক মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘যৌনতার বিনিময়ে বাসাভাড়ার প্রস্তাব অবৈধ।’

ad

পাঠকের মতামত