277257

কমিউনিটি ক্লিনিক, নাই সড়ক-সিঁড়ি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হলেও তাতে যাওয়ার জন্য কোনো সড়ক বা সিঁড়ি তৈরি করা হয়নি। ফলে সেখানে চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না। এতে ১২টি গ্রামের সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্লিনিকটি চালুর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মুজরাই গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই গ্রামের রমেন্দ্র বর্মন নামে এক ব্যক্তির দানকৃত ভূমিতে ২০১৬ সালে এইচইডি (হেল্থ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট) তাদের নিয়োগ দেয়া কন্ট্রাকটারের মাধ্যমে মুজরাই কমিউনিটি ক্লিনিকের নির্মাণ কাজ শুরু করে। নিন্মমানের রড, বালি, পাথর ব্যবহার করে ক্লিনিকের মূল ভবনের কাজ কোনোভাবে সম্পন্ন করা হলেও বাকি কাজ না করেই ২০১৭ সালের শেষের দিকে নির্মাণকাজ অসমাপ্ত রেখে চলে যায়। ফলে বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। এছাড়াও অন্যান্য অংশেও খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে।

মুজরাই কমিউনিটি ক্লিনিকটি চালু না হওয়ায় শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ছিলানী তাহিরপুর, জয়পুর, ইসলামপুর, জয়পুর নতুনহাটি, গোলাবাড়ি, শ্রীয়ারগাও, মুজরাই, মন্দিয়াতা, মইয়াজুরী, কামালপুর, মন্দিয়াতা, কান্দাহাটিসহ ১২টি গ্রামের শিশু-নারীসহ সাত হাজারের গ্রামবাসী স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন। নির্মাণ কাজ এক বছর পূর্বে শেষ করলেও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নেয় নি আজো। স্থানীয় বাসিন্দা মান্নান, এমদাদ, হাদিউজ্জামান জানান, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে মুজরাই কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ সিএইচসিপি পদে জহিরুল হককে নিয়োগ দেয়।

কিন্তু ক্লিনিক চালু না হওয়ায় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে পার্শ্ববর্তী বীরেন্দ্র নগর কমিউনিটি ক্লিনিকে কাজ করছেন তিনি। মুজরাই কমিউনিটি ক্লিনিকটি চালু না হওয়ায় এসব এলাকার গর্ভবতী মহিলাসহ এলাকাবাসীকে চিকিৎসার জন্য অনেক কষ্ট করে শ্রীপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও আশ পাশের স্থানীয় বাজারে পল্লীচিকিৎসকের নিকট হতে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। জটিল রোগের ক্ষেত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য যেতে হয়। ক্লিনিকটি চালু হলে এত কষ্ট হত না।

কমিউনিটি ক্লিনিক এসোসিয়েশনের সভাপতি বিলাল আমিন জানান, মুজরাই কমিউনিটি ক্লিনিকের মূল ভবন নির্মাণ হলেও সড়ক নির্মাণ হয় নি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। এই ক্লিনিকটি চালু হলে হাওর পাড়ের ১২টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ সহজে চিকিৎসা সেবা পেত। এখন অতিরিক্ত সময় ও টাকা ব্যয় করে কষ্ট করে হয় শ্রীপুর উত্তর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে না হয় উপজেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ৯নং ওর্য়াড মেম্বার সাজিনুর জানান, এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি চালু হলে এই এলাকার লোকজনের উপকার হত। প্রত্যন্ত এলাকায় সর্বস্থরের জনসাধারণের মাঝে সরকারের চিকিৎসা সেবা পৌছে দেয়ার যে প্রচেষ্টা তা বাস্তবায়িত হত।

বর্তমানে ক্লিনিকটিতে বৃষ্টির সময় ছাঁদ দিয়ে ভিতরে পানি পড়ে, ভিতরে স্যানিটেশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে এটি কোন কাজেই আসছে না। এই বিষয়ে এইচইডি (হেল্থ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট) ও তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত কন্ট্রাকটরের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি। তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেন জানান, মুজরাই ও চিসকা কমিউনিটি ক্লিনিকের বিষয়ে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে জানতে পেরেছি।

ad

পাঠকের মতামত