269107

চট্টগ্রামে শাহ আমানতে ছিনতাইয়ের কবলে পড়া বিমান জব্দ

নিউজ ডেস্ক।। ছিনতাইকারীর কবলে পড়া সেই বিমান ও খেলনা পিস্তল আলামত হিসেবে জব্দ করলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া। পতেঙ্গা থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান তিনি। তিনি বলেন, বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় সোমবার রাতে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০১২-এর ৬ ধারা এবং বিমান নিরাপত্তা বিরোধী অপরাধ দমন আইন, ১৯৯৭-এর ১১ (২) ও ১৩ (২) ধারায় পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

সিভিল এভিয়েশনের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। এতে নিহত যুবক মাহাদি পরিচয়দানকারী পলাশ আহমেদ ও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। রাজেশ বড়ুয়া বলেন, মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েই শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। এ সময় ছিনতাকাইকারীর কবলে পড়া বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৭ বিমানটির ভেতরে ঘুরে ঘুরে আলামত সংগ্রহ করা হয়। এরপর বিমানটি জব্দ করে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ছিনতাইকারীর ব্যবহৃত সেই খেলনা পিস্তলটিও।

তিনি বলেন, রোববার রাতে পরিচালিত কমান্ডো অভিযানে বিমানের ভেতরে গুলির চিহ্ন দেখা যায়। অভিযানে সম্মিলিত বাহিনীর গুলিতে বিমানের বাথরুম এবং বিমানের বামপাশের দেওয়ালে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া আরো কিছু তথ্য রয়েছে যা তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, সরকারি স্বার্থ জড়িত থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বিমানটি জব্দ করে তা মেরামতের জন্য সিভিল এভিয়েশনের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সারওয়ার ই আলমের জিম্মায় দেয়া হয়। র‌্যাব ও প্যারা কমান্ডোর কাছে যেসব আলামত রয়ে গেছে, সেগুলো হেফাজতে আনার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রাতেই তারা ছিনতাইকারীর কাছ থেকে উদ্ধার করা খেলনা পিস্তলটি পতেঙ্গা থানায় জমা দেন। সেখান থেকে ওই পিস্তলটিও জব্দ করা হয়েছে। বাকি তথ্য হেফাজতে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান রাজেশ বড়ুয়া।

অভিযানে বিমানটির বাথরুম ও বাম পাশের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সুপারভাইজার শওকত হোসেনও। তিনি বলেন, জব্দ বিমানটি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে মেরামত কাজ শুরু করেছেন। ঢাকা থেকে আসা প্রকৌশলীদের একটি টিম বিমানটি মেরামতের দায়িত্ব রয়েছেন।

রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং-৭৩৭ বিমানটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর বিমানটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। এ সময় দু’জন কেবিন ক্রুকে জিম্মি করার অভিযোগও পাওয়া যায়। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে জরুরি অবতরণ করে। তখন পাইলট-যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে নেয়া হয়। শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনার মধ্যে সন্ধ্যার দিকে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান ওইদিন সংবাদ সম্মেলনে জানান, অভিযানে ছিনতাইকারী নিহত হয়েছেন। তার নাম মাহাদি। কিন্তু র‌্যাবের সংরক্ষিত ডেটাবেইজ অনুসারে তার নাম পলাশ আহমেদ বলে শনাক্ত করা হয়। বিমানের টিকেটেও তার নাম মো. পলাশ আহমেদ লেখা থাকার কথা জানানো হয়। ওই টিকেটে বিমানটিতে তার আসন ছিল ১৭ অ।

ad

পাঠকের মতামত