236467

কারাগারের ধাপগুলো ছিল ভয়ংকর: শহিদুল আলাম

ফটো সাংবাদিক, সমাজকর্মী শহীদুল আলম বলেছেন, সরকার আমাকে গ্রেপ্তার করে বার্তা দিতে চেয়েছে তুমি যেই হও না কেন তোমাকে বন্দি করা কোন ব্যাপার নয়।মঙ্গলবার ডয়চে ভেলের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।আপনাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সরকার কী বার্তা দিতে চেয়েছিলো? এমন প্রশ্নের জবাবে শহিদুল অলাম বলেন, আমার মনে হয় দু’টো ব্যাপার: এক তারা খুব শক্তিশালী। দুই, তারা এই বার্তা দিতে চেয়েছিলো যে, তুমি যে-ই হও না কেন তোমার যত সামথ্য বা সমর্থন থাক না কেন, তোমাকে বন্দি করা কোন ব্যাপার নয়। এবং সেই মানুষটি নিরপরাধ হলেও সেটা কোন ব্যাপার নয়।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে কেবল রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ছিল এরপর বেসরকারি গণমাধ্যম এসেছে। এতে অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু বেসরকারি গণমাধ্যম রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা পালন করছে। এমনটি কিছু গণমাধ্যম সরকারের প্রচারণার মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। ফলে গণমাধ্যমের স্বাধীনত খর্ব হচ্ছে এবং একটা ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন সময় হুমকি দেয়া হয়।সত্যি কথা বলতে গেলে, বর্তমানে সাংবাদিকতায় সহজ পথ হলো সরকারের পথ ধরে চলা।জেলের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গে শহিদুল বলেন, প্রাথমিকভাবে তারা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করে। আমাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল। এরপর ১০০ দিন কারাবন্দি ছিলাম। তবে তিনটি ধাপ একই রকম ছিল না। প্রথাম ধাপটা ছিল ভয়ংকর। আমার মনে হচ্ছিল আরো খারাপ কিছু হতে পারে।

দ্বিতীয় দফায় তারা আমার কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে এবং আমাকে দিয়ে তারা যা চাইছে তা বলানোর চেষ্টা করে। যা তারা পারেনি।তৃতীয় ধাপটা ছিল দীর্ঘ, যখন আমি জেলে ছিলাম প্রথমে ভয় দেখাতো যখন কাজ হয়নি তখন তারা আমাকে বলেছিল যদি আমি বের হওয়ার পর মুখ বন্ধ রাখি তাহলে আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ তুলে নিয়ে মুক্তি দিবে। কিন্তু সেই কৌশলও যখন কাজ করল না, তখন আমাকে রিমান্ডে নেয়া হলো। এসময় আমতে অপরাধী প্রমান করতে নানা ধরনের তথ্য জানতে চাইলো। শেষ পর্যায়ে এসে তারা আমাকে বললো ক্ষমা চাইতে। যদিও এর মধ্যে কোনটাতেই সফল হয়নি। এরমধ্যে দেশের ভেতর ও বাহির থেকে প্রচন্ড চাপ আসছিল।

আমার মনে হয় তখনই তারা বুঝতে পেরেছে, তারা ভুল করেছে।প্রসঙ্গত, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে এক সাক্ষাৎকার দেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের সমালোচনা করেন। পরদিন ৫ আগস্ট শহিদুল আলমকে তার বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। ৬ আগস্ট তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ad

পাঠকের মতামত