235437

মেজর (অব.) মান্নান লড়েছিলেন পাকিস্তানি বাহিনীর হয়ে

প্রথম আলো: বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের অনুগত ছিলেন। এমন তথ্য এসেছে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে মান্নানের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার (অব.) জহির আলম খানের লেখা বইয়ে। তাতে বলা হয়, মেজর আবদুল মান্নান মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মেজর মান্নানের বর্তমান রাজনৈতিক সহকর্মী বিকল্পধারার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সমশের মবিন চৌধুরীর এক সাক্ষাৎকারেও একই রকম তথ্য এসেছে।তবে মেজর (অব.) মান্নান দাবি করেছেন, তিনি ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ বদলি হয়ে পাকিস্তানে চলে যান। সমশের মবিন চৌধুরীও এখন বলছেন, তিনি সাক্ষাৎকারে মান্নান সম্পর্কে অন্যের কাছ থেকে শোনা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।

ব্রিগেডিয়ার জহির আলম খান (জেড এ খান) ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৪ ডিভিশনের অধীন ৩ কমান্ডো ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ছিলেন। তিনি ২৫ মার্চ কালরাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার অভিযানে পাকিস্তান সেনাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পাকিস্তানি এই সেনা কর্মকর্তা পরে অবসরে গিয়ে দ্য ওয়ে ইট ওয়াজ নামে বই লিখেছেন। বইটি বিগত শতকের নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের করাচি থেকে প্রকাশিত হয়।জেড এ খান লিখেছেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ সকালে তাঁকে মেজর জেনারেল আবুবকর ওসমান মিঠা জানান যে চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কোনো যোগাযোগ নেই। মেজর জেনারেল মিঠা জেড এ খানকে নির্দেশ দেন দুই প্লাটুন সেনা নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য। সেই অভিযানে অংশ নেওয়া সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে মেজর মান্নানও ছিলেন।

তবে মেজর (অব.) আবদুল মান্নান গত ২৭ নভেম্বর প্রথম আলোকে বলেন, ‘এগুলো সবই গুজব। আমি কমান্ডোর নেতৃত্বে ছিলাম নাকি? আমেরিকায় একটি কোর্স করার জন্য আমাকে ফেব্রুয়ারিতে বদলি করা হয়। আর্মি অ্যাকশন শুরু হওয়ার পর আমাকে পাকিস্তানে বদলি করা হয়। ফ্লাইট না পাওয়ায় তাৎক্ষণিক যেতে পারিনি। আমি ২৮ মার্চ চলে যাই। সুতরাং আমি তো ছিলামই না। কমান্ডো ফোর্সের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না।’ব্রিগেডিয়ার জেড এ খানের বইয়ে থাকা তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মেজর মান্নান বলেন, ‘তিনি উল্টো বলেছেন। ওখানে কোনো বাঙালিকে নেতৃত্ব দেওয়া হয় নাই। আমি তো চলেই গিয়েছিলাম। সুতরাং এগুলো বিতর্কিত কথা।’ তিনি বলেন, ‘বইটা সম্পর্কে আমি শুনেছি। আমার কাছে কপি নাই। ইন মার্চ আই ওয়াজ পোস্টেড আউট। ২৬ তারিখ ঢাকায় আসি, ২৭ তারিখ ঢাকায় থেকে ২৮ মার্চ আমি চলে যাই। কাজেই এসব বিতর্কিত কথা।’

জেড এ খানের লেখা সম্পর্কে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘মেজর মান্নানকে ওই অভিযান স্যাবোটাজ করার জন্য যে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তা তো তিনি লেখেননি। তিনি কেবল একটি দিক নিয়ে লিখেছেন। মান্নানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় সেনা কারাগারে রাখা হয়েছিল। তারপর তাঁকে পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’ অবশ্য গ্রেপ্তার ও সেনা কারাগারে থাকার কথা মেজর মান্নান বলেননি।

ad

পাঠকের মতামত