234388

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে অবাধে চলছে গাঁজার আসর!

শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের ঠিক সম্মুখে মূলবেদীর মাঝখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে মোড়কে মোড়কে অনেকগুলো কাগজ-পত্রিকা। এসবের আশেপাশে সিগারেট-গাঁজার খোলা তামাক, বিড়ি-সিগারেটের খোসা, চানাচুরের প্যাকেট, পানির খালি বোতল ইত্যাদি যথেচ্ছ পড়ে আছে। যে কেউ দেখলেই বুঝবে, শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার কলঙ্কিত হয়েছে, শিক্ষার্থী নামক কিছু বিপথগামী নেশাখোরদের বিকৃতিমনা অভ্যাসে। এ যেন কোনো এক ভয়ানক গাঁজার আখড়া! ঠিক এমনটিই চোখে পড়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, শুধু দু-একদিন নয়, প্রায়শই শহীদ মিনারের এমন চিত্র চোখে পড়ে তাদের।

এসব দেখে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ দায়িত্ব মনে করে এগুলো নিজহাতে পরিষ্কার করেন; কেউ বা এড়িয়ে চলে আসেন না দেখার ভান করে। সচেতন শিক্ষার্থীরা একাধিকবার এসব বিষয়ে অভিযোগ করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।প্রশাসনিক আইনগতভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ধূমপানমুক্ত। প্রতিবছর ভর্তির সময় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ধূমপান করবেন না বলে অঙ্গীকারনামা দিয়ে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হলেও বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরের শহীদ মিনারে গাঁজার আসর কিভাবে চলে জানতে চাইলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মো. রুহুল আমিন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গাঁজার আসর চলে এর চাইতে লজ্জাজনক ব্যাপার আর কিছু হতে পারে না। রাতের বেলা শহীদ মিনারে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করে এসব অনাচার বন্ধ করা হোক।আরেক শিক্ষার্থী সঞ্জয় দাস বলেন, গাঁজা সেবন করাই যেখানে শাস্তিযোগ্য অপরাধ, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কিভাবে গাঁজার আসর বসে? প্রশাসনের এ দিকে নজর দিয়ে শহীদ মিনারে নিরাপত্তাকর্মী দেওয়া উচিত।শিক্ষার্থীরা জানান, মূলত রাতের বেলা নিরাপত্তা কর্মীর অনুপস্থিতি ও কোনো ধরনের আলোর ব্যবস্থা না থাকাতেই এ ধরনের অনৈতিক কাজগুলো হচ্ছে শহীদ মিনারে।

জানতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে শহীদ মিনারে লাইটিং ও সিকিউরিটি গার্ডের ব্যবস্থা করতে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারকে জানাবো।এসব অনাচার ও অনৈতিক কাজে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে চেষ্টা চালানো হবে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, শহীদ মিনার আমাদের সর্বোচ্চ সম্মানের জায়গা। এখানে এসব গর্হিত কাজ গুরুতর অপরাধ। যেহেতু এসবের সাথে অর্থের সম্পর্ক আছে তাই নেশা করতে অন্যান্য অপরাধও হতে পারে। তাই এসব রোধ করতে শহীদ মিনারে পর্যাপ্ত আলো ও নিরাপত্তা প্রহরী রাখা হবে।

ad

পাঠকের মতামত