210957

ও-তো ভালো ছিল, আমাদের সঙ্গে কত কথা বলেছে…

সেতো আমারে একা রাইখা চইল্যা গেল। ও আল্লাহ এখন কি হবে, সূচনা কারে বাবা বলে ডাকবে। ও-তো ভালো ছিল। আমাদের সঙ্গে কত কথা বলেছে। তাহলে কেন মারা গেলো।

নেপালে ইউএস-বাংলার প্লেন দুর্ঘটনায় আহত শাহিন ব্যাপারীর মৃত্যু খবর শুনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউ’র সামনে শোকে বুক থাপড়িয়ে বারবার এসব কথা বলছিলেন স্ত্রী রিমা আক্তার। তার এমন আর্তচিৎকারে শাহীনের অন্য স্বজনদের হৃদয়েও রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সবাই শাহীনের স্মৃতি মনে করে ডুকরে ডুকরে কাঁদছিলেন।

বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. সামন্ত লাল সেন বিকেল পোনে ৫টার দিকে শাহিন ব্যাপারীকে মৃত ঘোষণা করলে পুরো হাসপাতালে শোকের আবহ তৈরি হয়।

শাহিনের স্ত্রী রিমা বলেন, গতকাল অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়ার আগে তাকে আমি বলি, তুমি ভয় পেও না, ভালো হয়ে যাবে। জবাবে শাহিন বলে, আমি ভয় পাই না, আমি ভালো হয়ে যাবো। তোমরা আমার জন্য চিন্তা কোরো না।

আমাদের একমাত্র মেয়ে সূচনা খুব চাপা স্বভাবের। ও এখন কাকে বাবা বলে ডাকবে। গতকাল অস্ত্রোপচারের পর থেকে তার কোনো সাড়া-শব্দ ছিল না। চিকিৎসকদের অনেকবার বলেছি। তারা জানান, আস্তে আস্তে শাহিনের জ্ঞান ফিরবে। ভাইগো জ্ঞান ফিরলো তার ঠিকই, কিন্তু ওপারের জন্য। সব শেষ হয়ে গেলো।

মেয়েকে কোলে নিয়ে শোকে কাতর রিমা মৃত্যু সংবাদ পেয়ে ঢামেকে ছুটে আসেন শাহিনের ছোট ভাই চঞ্চল ব্যাপারী। তিনি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, নেপাল থেকে বার্ন ইউনিটে আসার পর ভাই ভালো ছিলেন। গ্রামের অনেক বার্ন ইউনিটে এসে তার সঙ্গে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন। ভাই সবার কাছে দোয়াও চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসকরা যদি আগে বলতেন শাহিনের অবস্থা খারাপ, তাহলে আমরা বাইরে নিয়ে যেতাম।

ad

পাঠকের মতামত