208039

মানজারুল ইসলামের শোকই যেন বাংলাদেশের শক্তি

মানজারুল ইসলাম রানা বিশ্বকাপে খেলেননি। কিন্তু বিশ্বকাপে সেদিন তিনি মাঠেই ছিলেন! খেলোয়াড়েরা তাঁকে হৃদয়ে ধারণ করে মাঠে নেমেছিলেন। ওপারে চলে যাওয়ার পরদিন মাশরাফির দল ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা জিতেছিল শুধু মানজারুলের জন্য। ১১ বছর পর সেই মানজারুল আজও বাংলাদেশ দলের ছায়াসঙ্গী!

২০০৭ বিশ্বকাপে পোর্ট অব স্পেনের সেই ম্যাচ নিশ্চয়ই মনে আছে? আগের দিন সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেলেন মানজারুল। খবরটি শেল হয়ে বিঁধেছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার বুকে। শুধু জাতীয় দল সতীর্থই নয়, অভিন্নহৃদয়ের বন্ধু ছিলেন দুজন। মানিকজোড়! মানজারুল সেই জোড় ভেঙে চলে গেলেন। পরদিন মাশরাফি তাঁর অধিনায়ককে বললেন, ‘সুমন ভাই, ম্যাচটা রানার জন্য জিততে হবে।’

নিজেদের উজাড় করে দিয়ে মাশরাফির এই দাবি মিটিয়েছিল দল। নাকি মানজারুল তা নিজেই মিটিয়ে চলছেন? নইলে তাঁর চলে যাওয়ার দিন এলেই বাংলাদেশ কেন জিতে যায়?
নাকি মানজারুল অলক্ষ্যে বসে আমাদের জিতিয়ে চলছেন! চলে যাওয়ার পরদিন জয় এসেছিল ভারতের বিপক্ষে। পাঁচ বছর পর ঢাকায় এশিয়া কাপে এই একই দিনে আবার জয়ের দেখা মিলেছে সেই ভারতেরই বিপক্ষে! সেদিন শততম সেঞ্চুরি করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ২৯০ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ভারত। তামিম, জহুরুল, নাসিরের ফিফটি আর শেষ দিকে মুশফিকের ২৫ বলে ৪৬ ম্যাচটি জিতিয়ে দেয় বাংলাদেশকে।

অথচ এই বসন্তে বাংলাদেশের জয়ের কোনো খবর নেই! কথাটি অবশ্য পুরোপুরি ঠিক নয়। এই ত্রিদেশীয় সিরিজেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু নেপালের বিমান দুর্ঘটনায় ২৬ বাংলাদেশি নাগরিকের প্রাণহানি মুছে দিয়েছে সেই জয়ের রেশ। কাঁদছে দেশ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজকের রোমাঞ্চকর জয় দিয়ে কি এই কান্না কিছুটা হলেও মুছে দেওয়া সম্ভব? হয়তো না। একটি ম্যাচ জয় যত রোমাঞ্চকরই হোক না কেন, তা দিয়ে নিশ্চয়ই প্রাণহানির ক্ষতিপূরণ হয় না। কিন্তু এই শোকেও মানজারুল আমাদের ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে তুলে দিলেন। আজ যে মানজারুলকে হারানোর দিনেও তিনি দলের ছায়াসঙ্গী!

ক্রিকেট আরও একবার হাসি–কান্নার উপলক্ষ হয়ে উঠল বাংলাদেশের জন্য। ভালো থাকুক বাংলাদেশ!

ad

পাঠকের মতামত