207750

সামনে বসা যাত্রীরাই বেঁচে ফিরেছেন

নিউজ ডেস্ক।।

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজটির একদম সামনের দিকেই বসেছিলেন স্কলাসটিকা স্কুলের উত্তরা শাখার জুনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার শাহরিন আহমেদ। সামনের সারিতে বসার কারণেই বেঁচে গেছেন তিনি। তার ভাষ্যমতে উড়োজাহাজটির সামনের সারিতে যারা বসেছিলেন, তাদের বেশিরভাগই প্রাণ নিয়ে ফিরেছেন। আর পেছনের দিকে যারা ছিলেন দুর্ভাগ্যবশত তারাই ওই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।

শাহরিনের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে নেপাল থেকে ঢাকায় এনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় শাহরিন আহমেদকে।

বর্তমানে বার্ন ইউনিটের আইসিইউর ভিআইপি কেবিন-২ ভর্তি আছেন শাহরিন। তার মা ফেরদৌসী মোস্তাকও হাসপাতালে উপস্থিত আছেন। শাহরিন একটি ট্যুরিস্ট দলের সঙ্গে গত ১২ মার্চ সোমবার ইউএস-বাংলার ওই ফ্লাইটে নেপালে গিয়েছিলেন।

শাহরিনের ভাই সরফরাজ আহমেদ জানান, দুর্ঘটনা কবলিত ওই উড়োজাহাজের সামনের দিকেই আমার বোন ছিল। সামনে ছিল বলেই ও বেঁচে গেছে। নেপালী সেনাসদস্যরা তাকে টেনে বের করেছেন। অন্যথায় হয়তো সে বের হতে পারতো না।

দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই আমি নেপালে যাই। দুর্ঘটনা কবলিত যারা আছেন তাদের সবার চেয়ে শেহরিনের শারীরিক অবস্থা অনেক ভালো।

সেখানকার চিকিৎসকরা বলেছেন তার ছোট একটা অপারেশন লাগতে পারে। এজন্য তাকে সেখানে থাকতে হতে পারে। ওখানে থাকলে ইনফেকশন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এছাড়া তার অপারেশনের প্রয়োজন হলে তা এই দেশেও করানো সম্ভব। তাই তাকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছি। শাহরিনের শারীরিক অবস্থা ভালো। তবে পায়ে একটা আঘাত রয়েছে।

শেহরিন কিছুটা ট্রমাতে ভুগছে। সরফরাজের ভাষায়, ‘এত বড় একটা দুর্ঘটনা নিজে দেখে এসেছে। অনেক দূর জার্নি করে এসেছে। ওই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সে আরো ট্রমায় চলে যেতে পারে। তাই গণমাধ্যমের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে তাকে যাতে কোনো ধরনের প্রশ্ন করা না হয়। ঘটনা সম্পর্কে জানতে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে আহ্বানও জানান তিনি।’

শাহরিনের ডান কাঁধে পুড়ে গিয়েছে এবং দুর্ঘটনায় ডান পা ফ্র্যাকচার হয়েছে বলে জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন।

তিনি বলেন, তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তার শরীরে ৫% ডিপ বার্ন রয়েছে। ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরই বলা যাবে তার অপারেশনের প্রয়োজন আছে কি না। আমরা এরই মধ্যে চিকিৎসা শুরু করে দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে ৬৭ জন যাত্রীসহ ৭১ জন আরোহী নিয়ে সোমবার দুপুরে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার সময় ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস-২১১ রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। এতে ৫১ জন আরোহী নিহত হন।

উড়োজাহাজে চার ক্রুসহ ৩৬ জন বাংলাদেশি ছিলেন। এদের ২৬ জনই নিহত হয়েছেন। উড়োজাহাজের ক্রুরা সবাই নিহত হন।

ad

পাঠকের মতামত