206439

চট্টগ্রামে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ট্যাংকে ফেলে দেন দপ্তরি

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ধলই ইউনিয়নের কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়–য়া নয় বছরের এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ছুরিকাঘাত করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়েছে ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি আপন চন্দ্র মালী (৫০)।

সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুল ছাত্রীর নিথর ও রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে গতকাল রোববার দিবাগত রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ক্ষুব্দ জনতা ধর্ষক আপন চন্দ্র মালীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উত্তেজিত জনতার হাত থেকে দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীকে আটক করে পুলিশী হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আপন চন্দ্র মালী স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন।
শিশুটি চিৎকার শুরু করায় তাকে দেওয়ালে ধাক্কা ও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে মৃত ভেবে তাকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন।

হাটহাজারী ধলই ইউপির সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য সুলতানা রিজিয়া জানান, শিশুটি কাটিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী। তার বড় ভাই কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। গতকাল সে এক বান্ধবীকে নিয়ে দুপুরে তার ভাইকে টিফিন দিতে বিদ্যালয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীকে তার ভাই কোথায় জিজ্ঞেস করলে দোতলায় আছে জানিয়ে তাকে সেখানে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে কোন শিক্ষার্থী ছিল না। এ সুযোগে সে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। শিশুটি চিৎকার শুরু করলে আপন সে মেয়েটির গলস ধরে দেয়ালের সাথে ধাক্কা দেয়। এতে শিশুটির মাথা ও মুখের একপাশে রক্তাক্ত গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে সে মেয়েটির গলায় ছুরি চালায়। পরে মৃত ভেবে শিশুটিকে বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সে।

এদিকে শিশুটির বান্ধবী অনেক্ষণ নিচে দাঁড়িয়ে থেকে স্কুল ছেড়ে চলে যায়। অনেকক্ষণ হয়ে গেলেও শিশুটি বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজ করতে থাকে। বিকেলের দিকে দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীর কাছে জানতে চাইলে সে এলোমেলো উত্তর দেয়। এতে সন্দিহান হয়ে লোকজন স্কুলে গিয়ে ছাত্রীটিকে খুঁজতে থাকে। এ সময় সেপটিক ট্যাংকে গোঙানির শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে শিশুটিকে খুঁজে পান ।

প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে প্রথমে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় ওই ছাত্রীকে। পরে স্থানীয় জনতা দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীকে তার বাড়ি থেকে আটক করে কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়।

এরপর কয়েক হাজার জনতা আপন চন্দ্রের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। অবস্থা বেগতিক দেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশে সংবাদ দেয়। সন্ধ্যার দিকে থানার এএসআই কফিল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আপন চন্দ্রকে আটক করে। পরে পুলিশ সেপটিক ট্যাংকের পাশে জমাট বাঁধা রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম জানান, মেয়েটির গলায় এবং মুখে বেশ কয়েকটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। সে বর্তমানে হাসপাতালের ১৯ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর।

কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকছুদ আহমদ বলেন, শিক্ষক ধর্মঘট থাকায় রোববার তিনি বিদ্যালয়ে যাননি। খবর পেয়ে তিনি ওই ছাত্রীকে দেখতে চমেক হাসপাতালে যান। তার আগেই স্কুলের দপ্তরি আপন চন্দ্র মালীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

ad

পাঠকের মতামত