
খাবারের ভ্যান থেকে অর্ধশতাধিক রেস্টুরেন্টের মালিক
১৯৯০ সালে ১৭ বছর বয়সে মাত্র ২০০ রুপি হাতে নিয়ে মুম্বাই আসেন প্রেম গানপাতি। উদ্দেশ্য স্বাবলম্বী হবেন। তখন এই তরুণ হিন্দিও বলতে পারতেন না। তবুও পরিশ্রম ও ধৈর্যের কারণে আজ তিনি কোটিপতি।
মুম্বাইয়ে আসার পর হিন্দি বলতে না পারায় তাকে একটি মন্দিরে নিয়ে যায় তামিল এক ভদ্রলোক। তিনি তাকে বুদ্ধি দেন যেন কিছু টাকা সংগ্রহ করে চেন্নাই ফিরে যায়। কিন্তু তিনি হার মানেননি বরং যুদ্ধ করেছেন নিজের সঙ্গে।
প্রথম কিছুদিন ঘোরাঘুরি করে মাহিম বেকারিতে থালাবাসন ধোয়ার কাজ পান তিনি। মাসিক ১৫০ রুপি করে উপার্জন করতেন তিনি। ১৯৯২ সালে ভাসি রেলস্টেশনের সামনে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। প্রথমে তিনি মাসিক ১৫০ রুপিতে একটি খাবারের ভ্যান ভাড়া করেন এবং এক হাজার রুপি দিয়ে কিছু জিনিসপত্র কেনেন।
কিছুদিন ব্যবসা করার পর তিনি এর পরিধি আরও বাড়াতে চান। গ্রাম থেকে তার দুই ভাইকে নিয়ে আসেন। তবে পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যগত বিষয়ে প্রায়ই স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তার ভ্যানটি জব্দ করত এবং জরিমানা হতো তার। কয়েকদিন বাদেই একটি দোকান ভাড়া করেন তিনি। তার ভ্যানটি একটি ছোট রেস্টুরেন্টে পরিণত হয়।
এখানে অনেক কলেজছাত্রের সঙ্গে তার বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের কাছ থেকেই তিনি ইন্টারনেট ব্যবহার করা শেখেন এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক রেসিপিও শেখেন। এর পর এক বছরে তিনি ২৬ রকমের দোসা চালু করেন। ২০০২ সালের মধ্যে তার রেস্টুরেন্টে ১০৫ রকমের দোসা পাওয়া যায়। তবে তার স্বপ্ন ছিল আউটলেট দেওয়া।
তিনি অনেক মলে চেষ্টা করেছেন কিন্তু কেউই তাকে আউটলেটের জন্য দোকান ভাড়া দেননি। তবুও আশা হারাননি প্রেম। চেষ্টা করে যান এবং একটা সময় একটি আউটলেট স্থাপন করে ফেলেন। কারণ মলের এক কর্মকর্তা তার দোসা রেস্টুরেন্টের এক নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন। এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১২ সালে দেশের ১১টি রাজ্যে তার ৪৫টি রেস্টুরেন্ট তৈরি হয়ে গেছে। দেশের বাইরে রয়েছে আরও ৭টি। তার বর্তমান মোট সম্পত্তি প্রায় ৩০ কোটি টাকার মতো।