
বাসর ঘরেই লাশ!
বিয়েবাড়িতে ধুমধাম আনন্দ-উল্লাস চলছে, গরু-খাসি জবাই করে চলছে রান্নাবান্না। বিশাল প্যান্ডেলে বউ-ভাতের অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নের সব ব্যবস্থাও প্রায় সম্পন্ন। এর মধ্যেই হঠাৎ খবর এলো নববধূ সাথী খাতুনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চারদিকে খোঁজখবর করার পর বাড়ির গেস্টরুমের বাথরুমের দরজা ভেঙে দেখা গেল ছাদের হুকের সঙ্গে ঝুলে আছে সাথীর নিথর দেহ। মুহূর্তেই সব আনন্দ উবে গেল। শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে বিয়েবাড়ির আনন্দমুখর পরিবেশ।
শুক্রবার সকালে ঈশ্বরদী শহরের পূর্বটেংরী শেরশাহ রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন সাথীর বাবা সিরাজুল ইসলাম। মামলায় আসামি করা হয়েছে নববধূর স্বামী মো. আবু হানিফ অন্তু, দেবর মো. জিসান, মো. তুষার, শ্বশুর আবদুল আজিজ মাখন, ভাশুর জিসানের স্ত্রী শিমলা খাতুন।
বিয়ের পর স্বামী মো. আবু হানিফ অন্তুর সঙ্গে সাথী খাতুন
মামলার পর পুলিশ অন্তু, জিসান ও শ্বশুরকে পুলিশ গ্রেফতার করে। সাথী ঈশ্বরদীর মানিকনগর পূর্বপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিকের মেয়ে। গত বৃহস্পতিবার উভয় পরিবারের সম্মতিতে পূর্বটেংরী শেরশাহ রোড এলাকার অন্তুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
সলিমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আখতারুল ইসলাম পুলিশের উপস্থিতিতে সাথীর মৃতদেহ নামান। তিনি বলেন, সাথীর গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তিনি বলেন, নিহতের গলায় জড়ানো শাড়িটিও ছিল থুঁতনির নিচে, পা ছিল মাটিতে লাগানো। বিয়েবাড়িতে আসা সাথীর চাচাতো বোন ববিতা বেগম বলেন, সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে নাশতা খেতে দেওয়ার সময় তিনি বোন-দুলাভাইকে নিয়ে একসঙ্গে নাশতা করবেন বলে জানান। এ সময় বাড়ির লোকজন তাকে বলেন, ওরা এখনও ঘুম থেকে ওঠেনি। কিছুক্ষণ পরই সাথীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঈশ্বরদী থানার ওসি (তদন্ত) রুহুল আমিন জানান, ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে বিস্তারিত জানা যাবে।
মামলার আগে বর অন্তু বলেছিলেন, বউ-ভাতের অনুষ্ঠানের কেনাকাটার জন্য তিনি বাজারে গিয়েছিলেন। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে সাথীর লাশ দেখতে পান।