196855

ধর্ষণ থেকে বাঁচাবে বিশেষ ধরণের অন্তর্বাস!

জার্মানির এক নারী এবার ধর্ষণ থেকে বাঁচার জন্য তৈরি করল এক বিশেষ ধরণের অন্তর্বাস। নিজের সাথে ঘটে যাওয়া এক ঘটনার পর তিনি এই কাজে মনযোগী হন।

উন্নত ইলেকট্রনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই প্যান্টিতে রয়েছে স্মার্টলক, যা খুলবে শুধুমাত্র সঠিক পাসওয়ার্ড দিলেই। এছাড়া এতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে জিপিআরএস-এর মাধ্যমে লোকেশন জানা যাবে। ব্লেডপ্রুফ কাপড় দিয়ে তৈরি এই প্যান্টিকে কাঁচি বা ব্লেড দিয়ে কাটা যাবে না। এমনকি এতে আগুনও ধরানো যাবে না।

আপনি যে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন তা দিলে সেকেন্ডের মাঝেই এই প্যান্টি খুলে যাবে, কিন্তু অন্য কেউ যদি চেষ্টা করে তাহলে অনেক জোরে রিং বেজে উঠবে। ১৪০ ডেসিবলের সমান আওয়াজে অ্যালার্মটি বাজবে। আবার নিজের ইচ্ছাতেই যখন কোনও সমস্যায় পড়বেন, তখনও অ্যালার্ম বাজাতে পাড়বে পরিহিত ব্যক্তিরা।

জার্মানির সান্দ্রা সেলিজ এই প্যান্টি তৈরি করেছেন, যা কালো রংয়ের পাবেন। তিনি তার সাথে ঘটে যাওয়া এক ঘটনা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেন, তাকে তিনজন পুরুষ একত্রিত হয়ে ধরেছিলেন। একজন তার ট্রাউজার খোলার চেষ্টা করছিলেন, আরেকজন তাকে ধরে রাখেন এবং তৃতীয় ব্যক্তিটি তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করতে থাকেন।

ঠিক সেই মুহূর্তে একজন ব্যক্তি তার পালিত কুকুর নিয়ে সেখানে চলে আসেন এবং তাৎক্ষনিক সেই তিনজন ব্যক্তি চলে যায়। এরপর থেকেই সান্দ্রার মাথায় ঘুরতে থাকে, সেদিন আসলে কি হতে পারত! এরপরেই তিনি এই অন্তর্বাস তৈরি করার চিন্তা করেন।

হাফিংটন পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী বছরে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ যৌন নির্যাতনের শিকার হন কানাডায়। বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটে বাড়িতে চেনা পরিবেশে এবং ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে পরিবার-বন্ধুবান্ধবরাই যৌন নির্যাতন করেন। ১৬ বছরের নীচে ধর্ষণের হার শতাংশ। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়াতে ২০১২ সালের হিসাব ধরলে পঞ্চাশ হাজারের বেশি মহিলা বছরে নির্যাতিতা হন। অর্থাত্ প্রতি ৬ জনে ১ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর বাইরে ডেনমার্কে ৫২ শতাংশ মহিলা যৌন নির্যাতনের শিকার হন প্রতিবছর।

যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের শিকার হওয়াদের মধ্যে ৯১ শতাংশ মহিলা ও অবশিষ্ট ৯ শতাংশ পুরুষ। প্রতি ৩ জনে একজন নারী ধর্ষিত হয়। ১৮ বছরের পূর্বে ৪০ শতাংশ নারী এখানে ধর্ষণের শিকার হয়। প্রতি ১০৭ সেকেন্ডে একজন ধর্ষিতা হয় যুক্তরাষ্ট্রে। ১২-১৮ বছর বয়সী ২ লাখ ৯৩ হাজার শিশু-কিশোরীর ধর্ষিত হবার তথ্য পাওয়া গেছে। এখানে ৬৮ শতাংশ ধর্ষণের রিপোর্ট হয় না। ৯৮ ভাগ ধর্ষকের শাস্তি হয় না। এমনকি কারাগারেও নারীদের স্বস্তি নেই। ২ লাখ ১৬ হাজার নারী প্রতিবছর কারাগারে ধর্ষিত হয়।

সুইডেনে প্রতি চারজনে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হন। আর পঞ্চম স্থানে থাকা ভারতে প্রতি ২০ মিনিটে একজন নারী ধর্ষিত হয়। ৯০ ভাগ ধর্ষণের ঘটনায় কোন মামলা হয় না কিংবা রেকর্ড থাকে না । অন্যদিকে, ইউরোপের উন্নত দেশ জার্মানিতে এখন পর্যন্ত ধর্ষণের ঘটনার প্রাণ হারিয়েছেন ২ লাখ ৪০ হাজার নারী। আর ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সে ধর্ষণের ঘটনা অপরাধ হিসাবে গণ্য হতো না। পরে তা অপরাধের তালিকায় স্থান পেয়েছে। বছরে ৭৫ হাজারের বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ফ্রান্সে। তবে ১০ শতাংশ ঘটনারও অভিযোগ জমা পড়ে না পুলিশে।

এরকম যখন সাড়া বিশ্বের অবস্থা, তখন নিজেদের সুরক্ষা কবচ নিজেদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরাই শ্রেয় বলে মনে হয়।

ad

পাঠকের মতামত