196129

৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীর জন্মদেয়া সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে দ্বন্দ্ব

নিউজ ডেস্ক ।।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এক কিশোরীকন্যার গর্ভ থেকে পিতৃপরিচয়হীন এক সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। বাচ্ছা প্রসবের ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে দিয়ারআমখোলা গ্রামে ওই মেয়ের নিজ বাড়িতে। এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে গেলে স্কুলপড়ুয়া ওই কিশোরী বলে, ‘বেশ কিছুদিন পূর্বে আমার নানার মৃত্যুতে মা সেখানে চলে যান। এ সুযোগে সুযোগ সন্ধানী একই এলাকার আলাউদ্দিন মল্লিকের ছেলে সাইফুল মল্লিক (২০) আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এমনকি একই দিন সাইফুলের পর পরই ইয়াছিন ফরাজীর পুত্র ইউসুব ফরাজীও (২১) আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। যেকারণে আজ আমার এ অবস্থা।’

সন্তানতো দু’জনের হতে পারে না এমন প্রশ্নের জবাবে সে বলে, ‘ওদের যেকোনো একজনের হবে।’

এঘটনার সাথে জড়িতরা বর্তমানে রাজধানীর ঢাকায় বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করছে বলে তাদের পরিবার সূত্রে জানা যায়। তবে স্থানীয়দের সন্দেহের তীর অন্যদিকে হলেও মেয়ের পক্ষ থেকে সাইফুল মল্লিক ও ইউসুব ফরাজীর কথাই বার বার বলা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে লতাচাপলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পর সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার হারুন অর রশিদসহ মেয়ের বাড়ি যাই এবং এ বিষয় জানতে চাইলে প্রথমে একজনের নাম বলে এবং পরে আরো কয়েকজনের নাম বলে। যেকারণে আইনী সহয়তা ছাড়া কিছু বলা সম্ভব নয়। আমি তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেই এবং থানায় অভিযোগ দেয়ার জন্য বলি।’

এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয় থানায় এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর সন্তানের পিতৃপরিচয় মিললো ডিএনএ টেস্টে
মীর মোহাম্মদ ফারুক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর), ২৫ অক্টোবর ২০১৭
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অলিয়ারচালা এলাকায় ধর্ষিতা ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীর গর্ভজাত সন্তানের পিতৃপরিচয় মিলেছে ডিএনএ টেস্টে। তবে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদ আলী (৫০) বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পায়তারা করছে বলে ওই ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ করেছেন। নুর মোহাম্মদ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার অলিয়ার চালা এলাকার মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে।

ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈরের বড়ইবাড়ি এলাকার একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেনীতে অধ্যয়নরত এক ছাত্রী নিয়মিত নুর মোহাম্মদ আলীর বাড়ির সামনে দিয়ে স্কুলে যেত। এ সুযোগে নুর মোহাম্মদ বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ওই ছাত্রী রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত নুর মোহাম্মদ একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে (ছাত্রী) জোর করে তার (নুর মোহাম্মদ) ঘরে নিয়ে যায়। এ সময় নুর মোহাম্মদের বাড়িতে কেউ ছিল না। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি দেখান। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে (ছাত্রী) খুন জখম করে বস্তায় ভরে পানিতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। এক পর্যায় ওই ছাত্রীর মুখ বেধে ধর্ষণ করে নুর মোহাম্মদ।

ঘটনাটি সে (ছাত্রী) প্রাণের ভয়ে কাউকে জানায়নি। ওই ছাত্রীর দেহের পরিবর্তন দেখে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হয়। পরে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলার সফিপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করায়। পরীক্ষায় ধরা পড়ে ছাত্রীটি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি জানতে পেরে ওই দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে ছাত্রীর মামা রাসেল মিয়া বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (মামলা নং-৮৬(২)/১৭) করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ওইদিন দুপুরে নুর মোহাম্মদকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুর মোহাম্মদ ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করলেও সন্তান তার না বলে দাবি করে। পরে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠায়।

তিনমাস পর ওই স্কুল ছাত্রী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। পরে আদালতের নির্দেশের শিশুরটি পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় শিশুটির পিতা নুর মোহাম্মদ বলে নিশ্চিত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর নুর মোহাম্মদ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গা ঢাকা দেয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি দেশের বাইরে যাওয়ার পায়তারা করছে বলেও ওই স্কুল ছাত্রী অভিযোগ করে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদ জানান, ”বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। শেষ বয়সে বিদেশ গিয়ে কি করব। শিশুটি আমার কিনা তা আমি নিশ্চিত নই। ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নাই”।

কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ আজিম হোসেন জানান, নুর মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। পরে জামিনে মুক্ত হয়েছে। এর পর বিদেশে চলে গেলে আমাদের তো আর কিছুই করার থাকে না। উৎস: নয়া দিগন্ত।

ad

পাঠকের মতামত