195677

‘‌একটু দেখতে দিন দাদা, একবার দেখব’‌

‘‌করিমপুর থেকে এসেছি, বোন মিনতি মিত্র, ভাগ্নের সঙ্গে সকালে বেরিয়েছিল। ভাগ্নের বয়স ২৬ বছর। সবে স্কুলে চাকরি পেয়েছে। সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। একটু দেখতে দিন দেহ, কেউ দেখতে দিচ্ছে না।’‌ পাড়ে দাঁড়িয়ে অঝোরে কেঁদে চলেছেন মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি।

এই এনবিএসটিসির বাসেই ভারতের ভৈরব নদীর গর্ভে মৃত্যু হয় তার বোন আর ভাগ্নের। শুধু তিনিই নন, এরকম শত শত লোক পাড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাদের আপনজনদের খোঁজে।

চারটি ক্রেনে ভৈরব নদীর খাল থেকে টেনে তোলা এনবিএসটিসির সেই অভিশপ্ত বাস থেকে তখনও চলছে মৃতদেহ বের করার কাজ। সকাল থেকে প্রায় ৮ ঘণ্টা পর খালের পাক থেকে টেনে বের করা গিয়েছে বাসটিকে। বাসের ভেতরে থরে থরে আটকে রয়েছে নিথর দেহ। হয়তো এর মধ্যেই রয়েছে মিনতি রায় ও তার ছেলের দেহ।

দিনের আলো ততক্ষণে নিভে গিয়েছে। ব্রিজের উপর সার্চ লাইট জ্বালিয়ে চলে উদ্ধার কাজ। সকলেই প্রাণপণে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। হয়তো এমার্জেন্সি গেটটা খুলতে পারলে অনেকে বাঁচতে পারতেন। মৃতের সংখ্যা ২৫ ছাড়িয়েছে। ভোরের বাসে উঠেই অনেকেই হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সেই ঘুম যে কাল ঘুম হবে কে জানতো।

দুর্ঘটনা থেকে যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাদের কথায় চালক নাকি ডান হাতে মোবাইলে কথা বলছিলেন, বা হাতে ছিল মোবাইল ফোন। ফোনে মনযোগ দিয়ে ফেলাতেই স্টিয়ারিংটা সামলাতে পারেননি। বেসামাল বাস সোজা রেলিং ভেঙে খালের জলে। শীতের ভোরে জানালা-দরজা বন্ধ থাকায় কেউ বেরিয়ে আসতেও পারেননি।চালক মোবাইলটা না ধরলে হয়তো ঘটতো না এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ‌‌

ad

পাঠকের মতামত